Header Ads Widget

Responsive Advertisement

৭২ দলের পরিচিতি ও মুক্তি প্রাপ্ত দল কোনটি ও আমাদের করনীয়

>>>> ৭২ দলের পরিচিতি ও মুক্তি প্রাপ্ত দল কোনটি ও আমাদের করনীয় <<<<



রাসূল (সাঃ) মুক্তিপ্রাপ্ত দলের পরিচয় প্রসঙ্গে অন্য হাদীসে বলেন,
ﻣﺎ ﺍﻧﺎ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺃﺻﺤﺎﺑﻰ .

‘(মুক্তিপ্রাপ্ত দল) হচ্ছে আমি ও আমার সাহাবীগণ যে পথের উপর আছি’ [সহীহ তিরমিযী হা/২১২৯; সিলসিলা সহীহাহ হা/১৩৪৮; হাকেম ১/১২৯; আহমাদ বিন হাম্বল, সুন্নাতের মূলনীতি, বাংলায় ইসলাম, (ইংল্যান্ড দ্বিতীয় সংস্করণ, এপ্রিল ২০০২), পৃঃ ২৪]।

অন্য বর্ণনায় এসেছে,

ﺳَﺘَﻔْﺘَﺮِﻕُ ﺃُﻣَّﺘِﻲْ ﻋَﻠَﻰ ﺛَﻼَﺙٍ ﻭَّﺳَﺒْﻌِﻴْﻦَ ﻣِﻠَّﺔً ﻛُﻠُّﻬُﻢْ ﻓِﻲ ﺍﻟﻨَّﺎﺭِ ﺇِﻻَّ ﻭَﺍﺣِﺪَﺓً ﻗِﻴْﻞَ َﻣَﻦْ ﻫُﻢْ ﻳَﺎ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠﻪِ ﻗَﺎﻝَ ﺍﻟَّﺬِﻳْﻦَ ﻋَﻠَﻰ ﻣَﺎ ﺃَﻧَﺎ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺃَﺻْﺤَﺎﺑِﻲْ-

‘আমার উম্মত তিয়াত্তর দলে বিভক্ত হবে। একটি দল ছাড়া সবাই জাহান্নামে যাবে। জিজ্ঞেস করা হ’ল, তারা কারা হে আল্লাহর রাসূল (সাঃ)! তিনি বললেন, ‘যারা আমার ও আমার ছাহাবীদের আদর্শের উপর প্রতিষ্ঠিত’। [তিরমিযী হা/২৬৪১; মিশকাত হা/১৭১ ‘কুরআন ও সুন্নাহ দৃঢ়ভাবে আঁকড়ে ধরা’অনুচ্ছেদ; সিলসিলা সহীহাহ হা/১০৪৮]।


এই হাদীসেও রাসূল (সাঃ) মুক্তিপ্রাপ্ত কোন দলের নাম বলেননি; বরং বৈশিষ্ট্যের কথা উল্লেখ করেছেন। রাসূল (সাঃ) কোন দলের নাম বললে সবাই সেই দলের অনুসারী বলে দাবী করত। এজন্য রাসূল (সাঃ) বৈশিষ্ট্যের কথা বলেছেন, যাতে পবিত্র কুরআন ও সহীহ হাদীসের উপরে আমল করার মাধ্যমে রাসূল (সাঃ) - এর উদ্দীষ্ট দল তৈরী হয়।
>>>> দল - দলের নাম দল/উপদলের সংখ্যা <<<<
হযরত আব্দুল কাদের জিলানী (রহঃ) তাঁর উপোল্লিখিত গ্রন্থে উক্ত নয়টি দল যে বাহাত্তর দলে বিভক্ত হয়েছে সেগুলির নাম উল্লেখ করেছেন নিম্নোক্ত ভাবেঃ

১ম খারেজী ১৫
২য় শিয়া ৩ দলে বিভক্তঃ
(১) ১২
(২) ৬
(৩) ১৪
৩য় মুতাজিলা ৬
৪র্থ মুরজীয়া ১২
৫ম মুশাব্বিয়া ৩
৬ষ্ঠ জহমিয়া বা জবরিয়াহ ১
৭ম জরারিয়াহ ১
৮ম নজ্জারিয়অহ বা ছেফাতিয়াহ ১
৯ম কালাবিয়াহ ১
মোট= ৭২ উপদল বা ফিরকা


রাসূল (সাঃ) এর বানী কি সঠিক প্রমানিত হয়েছে...তাহলে এখন কি করতে হবে তার প্রমান ও কিন্তু উক্ত বর্ননায় এসেছে?


>>>> মুক্তিপ্রাপ্ত দলের বৈশিষ্ট্য ও সমাধান <<<<
হাদীসের আলোকে মুক্তিপ্রাপ্ত দলের বৈশিষ্ট্য হ’ল রাসূল (সাঃ) ও তাঁর সাহাবীগণ যে পথের অনুসারী ছিলেন সে পথের অনুসরণ করা। কুরআনের অসংখ্য আয়াতে আল্লাহর অনুসরণের পাশাপাশি রাসূলের অনুসরণের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আল্লাহ বলেন,
ﻗُﻞْ ﺃَﻃِﻴْﻌُﻮﺍْ ﺍﻟﻠﻪَ ﻭَﺍﻟﺮَّﺳُﻮْﻝَ ﻓﺈِﻥْ ﺗَﻮَﻟَّﻮْﺍ ﻓَﺈِﻥَّ ﺍﻟﻠﻪَ ﻻَ ﻳُﺤِﺐُّ ﺍﻟْﻜَﺎﻓِﺮِﻳْﻦَ -
‘আপনি বলুন, তোমরা আল্লাহ ও রাসূলের অনুসরণ কর, যদি তারা মুখ ফিরিয়ে নেয়, তবে জেনে রাখ নিশ্চয়ই আল্লাহ কাফিরদের ভালবাসেন না’ (আলে ইমরান ৩/৩২)। এছাড়াও সূরা নিসা ১৩-১৪, ৫৯, ৬০-৬১, ৭৯-৮০; মায়েদা ৯২; আনফাল ২৪, ৪৬; নহল ৪৪ ও নূর ৬৩ আয়াতে এ বিষয়ে আলোচনা এসেছে।


রাসূল (সাঃ) ও বিভিন্ন হাদীসে তাঁর অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছেন। বিশেষত মতপ্রার্থক্যের সময় রাসূলের ও খুলাফায়ে রাশেদীনের অনুসরণের নির্দেশ দিয়ে তিনি বলেন,
ﻣَﻦْ ﻳَﻌِﺶْ ﻣِﻨْﻜُﻢْ ﻓَﺴَﻴَﺮَﻯ ﺍﺧْﺘِﻼَﻓًﺎ ﻛَﺜِﻴْﺮًﺍ ﻓَﻌَﻠَﻴْﻜُﻢْ ﺑِﺴُﻨَّﺘِﻰْ ﻭَﺳُﻨَّﺔِ ﺍﻟْﺨُﻠَﻔَﺎﺀِ ﺍﻟﺮَّﺍﺷِﺪِﻳْﻦَ ﺍﻟْﻤَﻬْﺪِﻳِّﻴْﻦَ ﻋَﻀُّﻮْﺍ ﻋَﻠَﻴْﻬَﺎ ﺑِﺎﻟﻨَّﻮَﺍﺟِﺬِ ﻭَﺇِﻳَّﺎﻛُﻢْ ﻭَﻣُﺤْﺪَﺛَﺎﺕِ ﺍﻷُﻣُﻮْﺭِ ﻓَﺈِﻥَّ ﻛُﻞَّ ﺑِﺪْﻋَﺔٍ ﺿَﻼَﻟَﺔٌ -
‘তোমাদের মধ্যে থেকে যারা জীবিত থাকবে, তারা অচিরেই অনেক মতবিরোধ দেখতে পাবে। অতএব (মতভেদের সময়) আমার সুন্নাত এবং আমার হেদায়াতপ্রাপ্ত খুলাফায়ে রাশেদীনের সুন্নাতের অনুসরণ করা হবে তোমাদের অপরিহার্য কর্তব্য। এ সুন্নাতকে খুব মযবুতভাবে মাড়ির দাঁত দিয়ে আঁকড়ে ধরে থাক। আর সমস্ত বিদ‘আত থেকে বিরত থাক। কেননা প্রত্যেকটি বিদ‘আতই গুমরাহী’। [আবূ দাউদ হা/৪৬০৭; তিরমিযী হা/২৬৭৬; ইবনু মাজাহ হা/৪২৪৪; আহমাদ হা/১৬৬৯৪; ইবনু খুযায়মা, ‘জুমআ অধ্যায় হা/১৭৮৫; মিশকাত হা/১৬৫; রিয়াযুস সালেহীন - হা/১৫৭]।


>>>> মতবিরোধ দেখা দিলে করনীয় কি <<<<
এখানে লক্ষ্যণীয় যে, রাসূল (সাঃ) বলেছেন, যখন মতবিরোধ দেখা দিবে তখন তোমরা আমার সুন্নাতের অনুসরণ করবে। আর আমার সাহাবীগণ আমাকে যেভাবে অনুসরণ করছে, যেভাবে আমল করছে, যে আক্বীদা পোষণ করছে, তোমরা সেভাবেই আমার অনুসরণ করবে। সাথে সাথে ইসলামের নামে নব আবিষ্কৃত বস্ত্ত থেকে দূরে থাকবে। আজকের দিনে এই মতবিরোধপূর্ণ সমাজে যদি আমরা রাসূল (সাঃ)-এর অনুসারী হ’তে পারি এবং সাহাবীগণ যেভাবে কুরআন ও হাদীসকে বুঝেছেন ও আমল করেছেন সেভাবে বুঝতে ও আমল করতে পারি, তাহ’লেই আমাদের মধ্যে ঐক্য সম্ভব।

একটি বিষয় স্মর্তব্য যে, রাসূল (সাঃ)-এর মৃত্যুর পূর্বেই ইসলামকে পরিপূর্ণ করে দেওয়া হয়েছে। সুতরাং ইসলামের মধ্যে কম-বেশী করার অধিকার কাউকে দেওয়া হয়নি। বিদায় হজ্জের দিন আল্লাহ নাযিল করলেন,
ﺍﻟْﻴَﻮْﻡَ ﺃَﻛْﻤَﻠْﺖُ ﻟَﻜُﻢْ ﺩِﻳْﻨَﻜُﻢْ ﻭَﺃَﺗْﻤَﻤْﺖُ ﻋَﻠَﻴْﻜُﻢْ ﻧِﻌْﻤَﺘِﻲْ ﻭَﺭَﺿِﻴْﺖُ ﻟَﻜُﻢُ ﺍﻹِﺳْﻼَﻡَ ﺩِﻳْﻨًﺎ
‘আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীনকে পূর্ণাঙ্গ করলাম ও তোমাদের প্রতি আমার অনুগ্রহ সম্পূর্ণ করলাম এবং ইসলামকে তোমাদের দ্বীন হিসাবে মনোনীত করলাম’ (মায়েদা ৫/৩)। অন্যত্র আল্লাহ বলেন,
ﻭَﻣَﻦْ ﻳََّﺒْﺘَﻎِ ﻏَﻴْﺮَ ﺍﻹِﺳْﻼَﻡِ ﺩِﻳْﻨﺎً ﻓَﻠَﻦْ ﻳُّﻘْﺒَﻞَ ﻣِﻨْﻪُ ﻭَﻫُﻮَ ﻓِﻲ ﺍﻵﺧِﺮَﺓِ ﻣِﻦَ ﺍﻟْﺨَﺎﺳِﺮِﻳْﻦَ
‘কেউ ইসলাম ছাড়া অন্য কোন দ্বীন গ্রহণ করতে চাইলে তা কখনও গ্রহণযোগ্য হবে না এবং ক্বিয়ামতের দিন সে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে’(আলে ইমরান ৩/৮৫)।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, ইহুদী-নাসারাদের মত মুসলমান নামধারী একদল লোক কুরআনকে পরিবর্তন করতে না পারলেও কুরআনের অপব্যাখ্যা করছে। রাসূলের নামে অসংখ্য জাল হাদীস তৈরী করেছে। কিন্তু আল্লাহর কিছু বান্দা তাদের চক্রান্তের মোকাবিলায় হাদীস বাছাই করে আমাদের সামনে সহীহ হাদীসগুলি তুলে ধরেছেন। আমাদের উচিত কুরআনের সঠিক ব্যাখ্যা ও সহীহ হাদীস গ্রহণ করা। তাহ’লে আমাদের মাঝে মতভেদ মতপার্থক্য থাকবে না।

আল্লাহ তা’আলা আমাদেরকে সত্য বুঝার তৌফিক দান করুন, আমীন।


Post a Comment

0 Comments