ঈমান
ঈমান, মুমিন শব্দের শাব্দিক বিশ্লেষণঃ
ঈমান শব্দটি (أ م ن) ধাতু থেকে এসেছে। ঈমান শব্দের form I verb হল أَمِنَ (আমিনা) যার অর্থ নিরাপদ থাকা, নিরাপদ হওয়া, নিশ্চিন্ত থাকা। বিশ্বাস করা, বিশ্বাস স্থাপন করা, বিশ্বাস রাখা, আমানত রাখা। এর form IV verb ءَامَنَ (আ-মানা) যার অর্থ বিশ্বাস করা, বিশ্বাস স্থাপন করা, আস্থা রাখা, ঈমান আনা। নিরাপত্তা দেওয়া, আশঙ্কামুক্ত হওয়া। এর noun أَمْن (আমন) যার অর্থ নিরাপত্তা, আশংকামুক্তি, শান্তি। এর noun أَمِين (আমী-ন) যার অর্থ বিশ্বাসী, বিস্বস্ত, আমানতদার, নিরাপদ, নিশ্চিন্ত। আমীন! কবুল করুন! এর active participle ءَامِن (আ-মিন) যার অর্থ নিরাপদ, নিশ্চিন্ত, আশঙ্কামুক্ত, শান্তিপূর্ণ। এর passive participle مَأْمُون (মা’মু-ন) যার অর্থ নিরাপদ, বিপদমুক্ত, বিশ্বস্ত, বিশ্বাসযোগ্য। এর form IV verbal noun إيمَان (ঈমান) যার অর্থ বিশ্বাস, আস্থা, প্রত্যয়, ধর্মীয় বিশ্বাস, ঈমান। এর form IV active participle مُؤْمِن (মুমিন) যার অর্থ বিশ্বাসী, মুমিন, ঈমানদার, আস্থাশীল, আস্থাবান।
ঈমানের সংজ্ঞাঃ
আল্লামা হাফেজ ইবনে হাজার (রহিমাহুল্লাহ) বলেন- ঈমানের শাব্দিক অর্থ হল বিশ্বাস করা।(ফতহুল বারী খ:১, পৃ:৬০)
শায়খুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, ঈমানের ব্যুৎপত্তিগত অর্থ হচ্ছে স্বীকারোক্তি এবং আত্মার প্রশান্তি। আর সেটা অর্জিত হবে অন্তরে দৃঢ় বিশ্বাস পোষণ ও আমলের মাধ্যমে।
ঈমানের পারিভাষিক অর্থ: পারিভাষিক অর্থে আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামা‘আতের নিকট ঈমান হল মূল ও শাখাসহ হৃদয়ে বিশ্বাস, মুখে স্বীকৃতি ও কর্মে বাস্তবায়নের সমন্বিত নাম। প্রথম দু’টি মূল ও শেষেরটি হ’ল শাখা, যেটা না থাকলে পূর্ণ মুমিন হওয়া যায় না।
পূর্ববর্তী ওলামাগণ যেমন: ইবনে ওয়াইনা, সাওরী, জুরাইজ, মুজাহিদ, মালেক ইবনে আনাস প্রমুখের নিকট ঈমান হলো অন্তরে এক আল্লাহর বিশ্বাস স্থাপন, মুখে উচ্চারণ বা স্বীকার এবং তা আমলে পরিণত করার নাম। (ফতহুল বারী খ:১, পৃ:৬১)
ঈমান হচ্ছে জিব দিয়ে বলা এবং অঙ্গ প্রত্যঙ্গ দিয়ে করা আর অন্তর দিয়ে বিশ্বাস করা। (আশ-শরীয়াহ, ১৩১ পৃষ্ঠা)
দুই বিখ্যাত সাহাবী আলী ইবনে আবী তালিব এবং আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহুমা) বলেন, বিনা কাজে শুধু কথা ফায়দা দেয় না এবং বিনা কথায় কাজও হয় না। আর বলা ও করা বিনা নিয়তে বা মন থেকে হয় না। আর নিয়তও রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর তরীকা তথা সুন্নাত মোতাবেক না হলে তা সঠিক হয় না। (আশ-শরীয়াহ, ১৩১ পৃষ্ঠা)
এজন্য নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত এবং তাঁর সাহাবীদের একটি দল থেকে বর্ণিত আর অধিকাংশ তাবিঈ থেকে বর্ণিত আছে যে, ঈমান হচ্ছে- তাস্বদীকুম বিলকালব (অন্তরে সত্য জানা) – ক্বওলুম বিললিসান (জিব দ্বারা বলা) এবং আমালুম বিলজাওয়া-রিহ (অঙ্গ প্রত্যঙ্গ দ্বারা তা কাজে পরিণত করা) আর যারা এ কথা বলে না তারা ওদের মতে কুফরী করে। (আশ-শরীয়াহ, ১৩০ পৃষ্ঠা)
আজিরী (রহিমাহুল্লাহ) স্বীয় গ্রন্থ “আশ-শারীয়াহ” এর মধ্যে উল্লেখ করেছেন, জেনে রাখ, ঈমানের মৌখিক স্বীকৃতি ব্যতীত শুধুমাত্র অন্তর দ্বারা পরিচয় লাভ করা ও বিশ্বাস করা যথেষ্ট নয় এবং অঙ্গ প্রত্যঙ্গের আমল ব্যতীত শুধুমাত্র অন্তর দ্বারা পরিচয় লাভ করা ও মৌখিক স্বীকৃতি দেয়া যথেষ্ট নয়। যখন কোন ব্যক্তির মধ্যে এই তিনটি বৈশিষ্ট্য একত্রে পাওয়া যাবে তখন সে মুমিন হবে।
বাগ্বী (রহিমাহুল্লাহ) বলেছেনঃ সাহাবা, তাবিঈ ও পরবর্তী আহলুস সুন্নাহ-এর আলিমগণ ঐক্যমত পোষণ করেছেন যে, আমল (অর্থাৎ কর্ম) ঈমানের অন্তর্ভুক্ত। তাঁরা আরো বলেছেনঃ ঈমান হচ্ছে কথা, কর্ম ও বিশ্বাস।
সাহল ইবনে আব্দুল্লাহ তাসতারী (রহিমাহুল্লাহ)-কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল যে, ঈমান কী? তিনি বলেন কথা ও কাজ এবং মনন ও সুন্নত।
শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, “ঈমান যখন বিনা কাজে শুধু কথাতে হবে তখন তা কুফরী হবে। আর যখন তা শুধু কথা ও কাজে হবে বিনা মননে (নিয়তে) তখন তা মুনাফেকী হবে। আর যখন তা সুন্নাত মোতাবেক না হয়ে কেবল কথা ও কাজ এবং নিয়ত অনুযায়ী হবে তখন তা বিদআত ও মনগড়া হবে। (কিতাবুল ঈমান, ১৫২ পৃষ্ঠা)
সুতরাং ঈমানের সংজ্ঞা হল: মুখে উচ্চারণ, অন্তরে বিশ্বাস ও অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের মাধ্যমে কাজে পরিণত করা। আনুগত্য ও সৎ আমলের মাধ্যমে ঈমান বাড়ে এবং পাপাচার ও নাফরমানীর মাধ্যমে ঈমান কমে যায়।
ঈমানের রোকনঃ ঈমানের রোকন ছয়টি। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-
الإيمان أن تؤمن بالله، وملائكته، وكتبه، ورسله، واليوم الآخر. وتؤمن بالقدر خيره .وشره
ঈমান হলো- তুমি বিশ্বাস করবে আল্লাহর প্রতি, তাঁর ফিরিশতাগণের প্রতি, তাঁর কিতাব সমূহের প্রতি, তাঁর রাসূলগণের প্রতি ও শেষ দিবসের (আখিরাতের) প্রতি এবং ভাগ্যের (তাকদীরের) ভাল মন্দের প্রতি বিশ্বাস করবে। [সহীহ মুসলিম হাদীস নং-১, হযরত উমর ইবনুল খাত্তাব রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত]
ঈমানের শাখাঃ
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
الإِيمَانُ بِضْعٌ وَسَبْعُونَ أَوْ بِضْعٌ وَسِتُّونَ شُعْبَةً فَأَفْضَلُهَا قَوْلُ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَأَدْنَاهَا إِمَاطَةُ الأَذَى عَنِ الطَّرِيقِ وَالْحَيَاءُ شُعْبَةٌ مِنَ الإِيمَانِ
ঈমানের শাখা সত্তরটিরও কিছু বেশি অথবা ষাটটিরও কিছু বেশি, এর সর্বোচ্চ শাখা হচ্ছে “আল্লাহ ব্যতিত ইলাহ নেই” এ কথা স্বীকার করা, আর এর সর্বনিম্ন শাখা হচ্ছে রাস্তা থেকে কষ্টদায়ক বস্তু অপসারণ করা আর লজ্জা ঈমানের বিশিষ্ট একটি শাখা। সহীহ মুসলিম: ৫৯
আবু হুরায়রা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন যে, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
الإِيمَانُ بِضْعٌ وَسَبْعُونَ شُعْبَةً وَالْحَيَاءُ شُعْبَةٌ مِنَ الإِيمَانِ
ঈমানের শাখা সত্তরটিরও কিছু বেশি আর লজ্জা ঈমানের একটি শাখা। সহীহ মুসলিম: ৫৮
ঈমানের হ্রাস-বৃদ্ধিঃ
আনুগত্য ও সৎ আমলের মাধ্যমে ঈমান বাড়ে এবং পাপাচার ও নাফরমানীর মাধ্যমে ঈমান কমে যায়। আল্লাহ বলেছেন-
إِنَّمَا الْمُؤْمِنُونَ الَّذِينَ إِذَا ذُكِرَ اللَّهُ وَجِلَتْ قُلُوبُهُمْ وَإِذَا تُلِيَتْ عَلَيْهِمْ آيَاتُهُ زَادَتْهُمْ إِيمَانًا وَعَلَى رَبِّهِمْ يَتَوَكَّلُونَ
আসলে মুমিন তারাই, যখন আল্লাহর স্মরণ করা হয় তখন তাদের অন্তরসমূহ কেঁপে উঠে আর যখন তাদের কাছে তাঁর আয়াতসমূহ পাঠ করা হয় তখন তাদের ঈমান বৃদ্ধি পায় আর তারা তাদের রবের উপর ভরসা করে। আল-আনফাল, ৮/২
هُوَ الَّذِي أَنْزَلَ السَّكِينَةَ فِي قُلُوبِ الْمُؤْمِنِينَ لِيَزْدَادُوا إِيمَانًا مَعَ إِيمَانِهِمْ
তিনি মুমিনদের অন্তরে প্রশান্তি নাযিল করেন, যাতে তাদের ঈমানের সাথে আরো ঈমান বেড়ে যায়। আল-ফাত্হ ৪৮/৪
সুতরাং আনুগত্য ও নৈকট্যশীলতা যত বৃদ্ধি পায়, ঈমানও তত বৃদ্ধি পায়। আর আনুগত্য ও নৈকট্যশীলতা যত হ্রাস পায় ঈমানও তত হ্রাস পায়।
কুরআনে মুমিনদের পরিচয়ঃ
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا آمِنُوا بِاللَّهِ وَرَسُولِهِ وَالْكِتَابِ الَّذِي نَزَّلَ عَلَى رَسُولِهِ وَالْكِتَابِ الَّذِي أَنْزَلَ مِنْ قَبْلُ وَمَنْ يَكْفُرْ بِاللَّهِ وَمَلائِكَتِهِ وَكُتُبِهِ وَرُسُلِهِ وَالْيَوْمِ الآخِرِ فَقَدْ ضَلَّ ضَلالا بَعِيدً
হে মুমিনগণ, তোমরা ঈমান আন আল্লাহর প্রতি ও তাঁর রাসূলের প্রতি আর সে কিতাবের প্রতি যা তিনি তাঁর রাসূলের উপর নাযিল করেছেন এবং ঐ কিতাবের প্রতি যা তিনি পূর্বে নাযিল করেছেন আর যে আল্লাহকে ও তাঁর ফেরেশতাদেরকে ও তাঁর কিতাবসমূহকে ও তাঁর রাসূলগণকে এবং শেষ দিবসকে অস্বীকার করবে, সে বহুদূরে পথভ্রষ্টতায় পথভ্রষ্ট হয়েছে। আন-নিসা, ৪/১৩৬
.
وَالْمُؤْمِنُونَ كُلٌّ آمَنَ بِاللَّهِ وَمَلائِكَتِهِ وَكُتُبِهِ وَرُسُلِهِ لا نُفَرِّقُ بَيْنَ أَحَدٍ مِنْ رُسُلِهِ وَقَالُوا سَمِعْنَا وَأَطَعْنَا غُفْرَانَكَ رَبَّنَا وَإِلَيْكَ الْمَصِيرُ
আর মুমিনগণ প্রত্যেকে ঈমান এনেছে আল্লাহর প্রতি, তাঁর ফেরেশতাগণের প্রতি, তাঁর কিতাবসমূহের প্রতি ও তাঁর রাসূলগণের প্রতি, (তারা বলে) ‘আমরা তাঁর রাসূলগণের কারও মধ্যে তারতম্য করি না’, তারা আরও বলে, ‘আমরা শুনলাম এবং মেনে নিলাম, হে আমাদের রব! আপনি আমাদের ক্ষমা করুন, আর আপনার কাছেই প্রত্যাবর্তনস্থল’। আল-বাকারাহ, ২/২৮৫
.
لَكِنِ الرَّاسِخُونَ فِي الْعِلْمِ مِنْهُمْ وَالْمُؤْمِنُونَ يُؤْمِنُونَ بِمَا أُنْزِلَ إِلَيْكَ وَمَا أُنْزِلَ مِنْ قَبْلِكَ وَالْمُقِيمِينَ الصَّلاةَ وَالْمُؤْتُونَ الزَّكَاةَ وَالْمُؤْمِنُونَ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الآخِرِ أُولَئِكَ سَنُؤْتِيهِمْ أَجْرًا عَظِيمًا
কিন্তু তাদের মধ্যে যারা জ্ঞানে পরিপক্ক এবং মুমিনগণ ঈমান আনে যা আপনার প্রতি নাযিল করা হয়েছে আর যা আপনার পূর্বে নাযিল করা হয়েছে এবং তারা সালাত প্রতিষ্ঠাকারী ও যাকাত প্রদানকারী আর তারা আল্লাহর প্রতি ও শেষ দিবসের প্রতি ঈমান আনয়নকারী, তাদেরকে অচিরেই আমি মহাপুরস্কার প্রদান করব। আন-নিসা, ৪/১৬২
মুমিনদের বৈশিষ্ট্যঃ
طس تِلْكَ آيَاتُ الْقُرْآنِ وَكِتَابٍ مُبِينٍ هُدًى وَبُشْرَى لِلْمُؤْمِنِينَ الَّذِينَ يُقِيمُونَ الصَّلاةَ وَيُؤْتُونَ الزَّكَاةَ وَهُمْ بِالآخِرَةِ هُمْ يُوقِنُونَ
ত্বা-সীন; এগুলো আল-কুরআনের ও সুস্পষ্ট কিতাবের আয়াত। মুমিনদের জন্যে হেদায়াত ও সুসংবাদ। তারা সালাত কায়েম করে ও যাকাত প্রদান করে এবং তারা পরকালের প্রতি নিশ্চিত বিশ্বাস রাখে। আন্-নামল, ২৭/১-৩
.
قَدْ أَفْلَحَ الْمُؤْمِنُونَ الَّذِينَ هُمْ فِي صَلاتِهِمْ خَاشِعُونَ وَالَّذِينَ هُمْ عَنِ اللَّغْوِ مُعْرِضُونَ وَالَّذِينَ هُمْ لِلزَّكَاةِ فَاعِلُونَ وَالَّذِينَ هُمْ لِفُرُوجِهِمْ حَافِظُونَ إِلا عَلَى أَزْوَاجِهِمْ أوْ مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُهُمْ فَإِنَّهُمْ غَيْرُ مَلُومِينَ فَمَنِ ابْتَغَى وَرَاءَ ذَلِكَ فَأُولَئِكَ هُمُ الْعَادُونَ وَالَّذِينَ هُمْ لأمَانَاتِهِمْ وَعَهْدِهِمْ رَاعُونَ وَالَّذِينَ هُمْ عَلَى صَلَوَاتِهِمْ يُحَافِظُونَ أُولَئِكَ هُمُ الْوَارِثُونَ الَّذِينَ يَرِثُونَ الْفِرْدَوْسَ هُمْ فِيهَا خَالِدُونَ
অবশ্যই মুমিনগণ সফল হয়েছে। যারা তাদের সালাতে বিনয়ী-নম্র-ভীত। আর যারা অনর্থক কথাবার্তা থেকে বিরত থাকে। আর যারা যাকাত দানের ক্ষেত্রে সক্রিয়। আর যারা তাদের লজ্জাস্থানের হিফাযতকারী। তবে তাদের স্ত্রীদের ও তাদের ডান হাত যার মালিক হয়েছে (দাসীদের) সে ক্ষেত্রে তারা নিন্দনীয় নয়। অতঃপর যারা এছাড়া অন্যকে কামনা করবে তারাই সীমালংঘনকারী। আর যারা তাদের আমানতসমূহের ও ওয়াদার সংরক্ষণকারী। আর যারা তাদের সালাতসমূহের হেফাজত করে। তারাই হল উত্তরাধিকারী। যারা ফিরদাউসের উত্তরাধিকার লাভ করবে, তারা তাতে চিরস্থায়ী হবে। মু’মিনুন, ২৩/১-১১
.
وَالْمُؤْمِنُونَ وَالْمُؤْمِنَاتُ بَعْضُهُمْ أَوْلِيَاءُ بَعْضٍ يَأْمُرُونَ بِالْمَعْرُوفِ وَيَنْهَوْنَ عَنِ الْمُنْكَرِ وَيُقِيمُونَ الصَّلاةَ وَيُؤْتُونَ الزَّكَاةَ وَيُطِيعُونَ اللَّهَ وَرَسُولَهُ أُولَئِكَ سَيَرْحَمُهُمُ اللَّهُ إِنَّ اللَّهَ عَزِيزٌ حَكِيمٌ
আর মুমিন পুরুষ ও মুমিন, নারী তারা একে অপরের বন্ধু, তারা ভাল কাজের আদেশ দেয় ও অন্যায় কাজ হতে নিষেধ করে, আর তারা সালাত প্রতিষ্ঠা করে আর যাকাত প্রদান করে এবং আল্লাহ ও রাসূলের আনুগত্য করে, তাদের উপর আল্লাহ শীঘ্রই দয়া করবেন, নিশ্চয় আল্লাহ পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়। আত্-তাওবাহ, ৯/৭১
.
التَّائِبُونَ الْعَابِدُونَ الْحَامِدُونَ السَّائِحُونَ الرَّاكِعُونَ السَّاجِدُونَ الآمِرُونَ بِالْمَعْرُوفِ وَالنَّاهُونَ عَنِ الْمُنْكَرِ وَالْحَافِظُونَ لِحُدُودِ اللَّهِ وَبَشِّرِ الْمُؤْمِنِينَ
তারা তওবাকারী, ইবাদতকারী, আল্লাহর প্রশংসাকারী, সিয়াম পালনকারী, রুকুকারী, সেজদা আদায়কারী, সৎকাজের আদেশ দানকারী ও মন্দ কাজ থেকে নিষেধকারী এবং আল্লাহর নির্ধারিত সীমারেখা হেফাযতকারী আর মুমিনদেরকে সুসংবাদ দাও। আত্-তাওবাহ, ৯/১১২
মুমিনদের স্তরঃ
ثُمَّ أَوْرَثْنَا الْكِتَابَ الَّذِينَ اصْطَفَيْنَا مِنْ عِبَادِنَا فَمِنْهُمْ ظَالِمٌ لِنَفْسِهِ وَمِنْهُمْ مُقْتَصِدٌ وَمِنْهُمْ سَابِقٌ بِالْخَيْرَاتِ بِإِذْنِ اللَّهِ ذَلِكَ هُوَ الْفَضْلُ الْكَبِيرُ
অতঃপর আমি আমার বান্দাদের মধ্য হতে তাদেরকে কিতাবের অধিকারী করলাম যাদেরকে আমি বেছে নিয়েছি, তবে তাদের মধ্যে কতক নিজের প্রতি যুলুম করেছে আবার কতক মধ্যপন্থা অবলম্বন করেছে আবার কতক আল্লাহর ইচ্ছায় কল্যাণের কাজে অগ্রসর হয়েছে। এটাই মহা অনুগ্রহ। ফাত্বির, ৩৫/৩২
ঈমানের হ্রাস-বৃদ্ধির আয়াতগুলো দিয়ে বুঝা যায় ঈমানের স্তর রয়েছে। উপরের আয়াত থেকে বুঝা যায় মহান আল্লাহ ঈমানের দিক দিয়ে মুমিন বান্দাদের তিনটি স্তরে ভাগ করেছেন। যথা:
১. সাধারণ মুমিন।
২. মধ্যপন্থী মুমিন।
৩. অগ্রবর্তী মুমিন।
প্রকৃত মুমিন কারা?
إِنَّمَا الْمُؤْمِنُونَ الَّذِينَ إِذَا ذُكِرَ اللَّهُ وَجِلَتْ قُلُوبُهُمْ وَإِذَا تُلِيَتْ عَلَيْهِمْ آيَاتُهُ زَادَتْهُمْ إِيمَانًا وَعَلَى رَبِّهِمْ يَتَوَكَّلُونَ الَّذِينَ يُقِيمُونَ الصَّلاةَ وَمِمَّا رَزَقْنَاهُمْ يُنْفِقُونَ أُولَئِكَ هُمُ الْمُؤْمِنُونَ حَقًّا لَهُمْ دَرَجَاتٌ عِنْدَ رَبِّهِمْ وَمَغْفِرَةٌ وَرِزْقٌ كَرِيمٌ
আসলে মুমিন তারাই, যখন আল্লাহর স্মরণ করা হয় তখন তাদের অন্তরসমূহ কেঁপে উঠে আর যখন তাদের কাছে তাঁর আয়াতসমূহ পাঠ করা হয় তখন তাদের ঈমান বৃদ্ধি পায় আর তারা তাদের রবের উপর ভরসা করে। যারা সালাত প্রতিষ্ঠা করে এবং আমি তাদেরকে যে জীবিকা দিয়েছি তা থেকে ব্যয় করে। তারাই হল প্রকৃত মুমিন, তাদের রবের নিকট তাদের জন্য রয়েছে উচ্চ মর্যাদাসমূহ আর ক্ষমা ও সম্মানজনক জীবিকা। আল-আনফাল, ৮/২-৪
وَالَّذِينَ آمَنُوا وَهَاجَرُوا وَجَاهَدُوا فِي سَبِيلِ اللَّهِ وَالَّذِينَ آوَوْا وَنَصَرُوا أُولَئِكَ هُمُ الْمُؤْمِنُونَ حَقًّا لَهُمْ مَغْفِرَةٌ وَرِزْقٌ كَرِيمٌ
এবং যারা ঈমান এনেছে আর হিজরত করেছে আর আল্লাহর পথে জিহাদ করেছে আর যারা আশ্রয় দিয়েছে ও সাহায্য করেছে (আনসার) তারাই হল প্রকৃত মুমিন, তাদের জন্য রয়েছে সম্মানজনক জীবিকা। আল-আনফাল, ৮/৭৪
إِنَّمَا الْمُؤْمِنُونَ الَّذِينَ آمَنُوا بِاللَّهِ وَرَسُولِهِ ثُمَّ لَمْ يَرْتَابُوا وَجَاهَدُوا بِأَمْوَالِهِمْوَأَنْفُسِهِمْ فِي سَبِيلِ اللَّهِ أُولَئِكَ هُمُ الصَّادِقُونَ
প্রকৃত মুমিন তারাই যারা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের প্রতি ঈমান এনেছে, এরপর সন্দেহ পোষণ করেনি এবং তাদের সম্পদ ও তাদের জীবন দিয়ে আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করেছে, তারাই সত্যবাদী। আল-হুজুরাত, ৪৯/১৫
মুমিনদের উক্তি
إِنَّمَا كَانَ قَوْلَ الْمُؤْمِنِينَ إِذَا دُعُوا إِلَى اللَّهِ وَرَسُولِهِ لِيَحْكُمَ بَيْنَهُمْ أَنْ يَقُولُوا سَمِعْنَا وَأَطَعْنَا وَأُولَئِكَ هُمُ الْمُفْلِحُونَ
মুলত মুমিনদের উক্তি হল, যখন তাদের মাঝে ফায়সালা করে দেবার জন্যে আল্লাহ ও তাঁর রসূলের দিকে আহবান করা হয়, তখন তারা বলে, ‘আমরা শুনলাম ও মেনে নিলাম’ আর তারাই সফলকাম। আন-নূর, ২৪/৫১
মুমিনরাই হল মুসলিম
الَّذِينَ آمَنُوا بِآيَاتِنَا وَكَانُوا مُسْلِمِينَ
যারা আমার আয়াতসমূহের প্রতি বিশ্বাসী ছিল (অর্থাৎ মুমিন ছিল) আর তারা ছিল অনুগত (মুসলিম)। আয্-যুখরুফ, ৪৩/৬৯
মুমিনদের প্রতিদানঃ
وَبَشِّرِ الْمُؤْمِنِينَ بِأَنَّ لَهُمْ مِنَ اللَّهِ فَضْلا كَبِيرًا
আর মুমিনদের সুসংবাদ দাও যে, তাদের জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে রয়েছে বিরাট অনুগ্রহ। আল-আহযাব, ৩৩/৪৭
فَمَنْ يَعْمَلْ مِنَ الصَّالِحَاتِ وَهُوَ مُؤْمِنٌ فَلا كُفْرَانَ لِسَعْيِهِ وَإِنَّا لَهُ كَاتِبُونَ
সুতরাং যে মুমিন হয়ে সৎকাজ করে তবে তার প্রচেষ্টাকে অস্বীকার করা হবে না আর আমি তা লিখে রাখি। আল-আম্বিয়া, ২১/৯৪
وَمَنْ يَعْمَلْ مِنَ الصَّالِحَاتِ وَهُوَ مُؤْمِنٌ فَلا يَخَافُ ظُلْمًا وَلا هَضْمًا
যে মুমিন অবস্থায় সৎকর্ম করবে সে যুলুম ও ক্ষতির আশঙ্কা করবে না। ত্ব-হা, ২০/১১২
وَمَنْ أَرَادَ الآخِرَةَ وَسَعَى لَهَا سَعْيَهَا وَهُوَ مُؤْمِنٌ فَأُولَئِكَ كَانَ سَعْيُهُمْ مَشْكُورًا
আর যে আখেরাত চায় আর মুমিন হয়ে যথাযথ চেষ্টা-সাধনা করে তবে তার প্রচেষ্টা স্বীকৃত হবে। আল-ইস্রা, ১৭/১৯
وَعَنَتِ الْوُجُوهُ لِلْحَيِّ الْقَيُّومِ وَقَدْ خَابَ مَنْ حَمَلَ ظُلْمًا وَمَنْ يَعْمَلْ مِنَ الصَّالِحَاتِ وَهُوَ مُؤْمِنٌ فَلا يَخَافُ ظُلْمًا وَلا هَضْمًا
আর (সেদিন) চিরঞ্জীব, চিরস্থায়ী আল্লাহর সামনে সকল মুখমন্ডল অবনত হবে আর সে অবশ্যই ব্যর্থ হবে যে জুলুমের (গুনাহর) বোঝা বহন করবে। আর যে মুমিন অবস্থায় সৎকর্ম করে তবে সে জুলুম ও ক্ষতির আশঙ্কা করবে না। ত্ব-হা, ২০/১১১-১১২
مَنْ عَمِلَ سَيِّئَةً فَلا يُجْزَى إِلا مِثْلَهَا وَمَنْ عَمِلَ صَالِحًا مِنْ ذَكَرٍ أَوْ أُنْثَى وَهُوَ مُؤْمِنٌ فَأُولَئِكَ يَدْخُلُونَ الْجَنَّةَ يُرْزَقُونَ فِيهَا بِغَيْرِ حِسَابٍ
যে মন্দ কাজ করে তাকে অনুরূপ প্রতিফল দেয়া হবে, আর পুরুষ কিংবা নারী যে মুমিন হয়ে সৎকর্ম করে তবে তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে, সেখানে তাদেরকে বে-হিসাব রিযিক দেয়া হবে। আল-মুমিন, ৪০/৪০
وَمَنْ يَعْمَلْ مِنَ الصَّالِحَاتِ مِنْ ذَكَرٍ أَوْ أُنْثَى وَهُوَ مُؤْمِنٌ فَأُولَئِكَ يَدْخُلُونَ الْجَنَّةَ وَلا يُظْلَمُونَ نَقِيرًا
আর পুরুষ কিংবা নারীর মধ্যে যে মুমিন হয়ে সৎকর্ম করবে তবে তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে আর তাদের প্রতি সামান্য পরিমানও যুলুম করা হবে না। আন-নিসা, ৪/১২৪
مَنْ عَمِلَ صَالِحًا مِنْ ذَكَرٍ أَوْ أُنْثَى وَهُوَ مُؤْمِنٌ فَلَنُحْيِيَنَّهُ حَيَاةً طَيِّبَةً وَلَنَجْزِيَنَّهُمْ أَجْرَهُمْ بِأَحْسَنِ مَا كَانُوا يَعْمَلُونَ
পুরুষ কিংবা নারীর মধ্যে যে মুমিন হয়ে সৎকর্ম করে তবে তাকে আমি পবিত্র জীবন দান করব এবং তারা যা করত তার জন্য অবশ্যই আমি তাদেরকে অতি উত্তম প্রতিদান দেব। আন্-নাহ্ল, ১৬/৯৭
وَمَنْ يَأْتِهِ مُؤْمِنًا قَدْ عَمِلَ الصَّالِحَاتِ فَأُولَئِكَ لَهُمُ الدَّرَجَاتُ الْعُلَى جَنَّاتُ عَدْنٍ تَجْرِي مِنْ تَحْتِهَا الأنْهَارُ خَالِدِينَ فِيهَا وَذَلِكَ جَزَاءُ مَنْ تَزَكَّى
আর যারা তাঁর কাছে আসে মুমিন হয়ে সৎকর্ম করে, তাদের জন্য রয়েছে সুউচ্চ মর্যাদা, চিরস্থায়ী জান্নাত যার তলদেশে নহরসমূহ প্রবাহিত হবে, তারা সেখানে চিরকাল থাকবে, আর এটাই তাদের পুরস্কার যারা পবিত্র হবে। ত্ব-হা, ২০/৭৫-৭৬
وَعَدَ اللَّهُ الْمُؤْمِنِينَ وَالْمُؤْمِنَاتِ جَنَّاتٍ تَجْرِي مِنْ تَحْتِهَا الأنْهَارُ خَالِدِينَ فِيهَا وَمَسَاكِنَ طَيِّبَةً فِي جَنَّاتِ عَدْنٍ وَرِضْوَانٌ مِنَ اللَّهِ أَكْبَرُ ذَلِكَ هُوَ الْفَوْزُ الْعَظِيمُ
আল্লাহ মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীদের জান্নাতের ওয়াদা দিয়েছেন, যার তলদেশে নহরসমূহ প্রবাহিত হবে, তারা সেখানে চিরকাল থাকবে, আরও (ওয়াদা দিচ্ছেন) চিরস্থায়ী জান্নাতে পবিত্র বাসস্থানের আর সবচেয়ে বড় হল আল্লাহর পক্ষ হতে সন্তুষ্টি, এটাই মহাসাফল্য। আত্-তাওবাহ, ৯/৭২
وَمَنْ يُؤْمِنْ بِاللَّهِ وَيَعْمَلْ صَالِحًا يُكَفِّرْ عَنْهُ سَيِّئَاتِهِ وَيُدْخِلْهُ جَنَّاتٍ تَجْرِي مِنْ تَحْتِهَا الأنْهَارُ خَالِدِينَ فِيهَا أَبَدًا ذَلِكَ الْفَوْزُ الْعَظِيمُ
আর যারা আল্লাহর প্রতি ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে তিনি তার পাপসমূহ মোচন করে দিবেন এবং তাকে প্রবেশ করাবেন জান্নাতসমূহে, যার পাদদেশ দিয়ে ঝর্ণাধারা প্রবাহিত, সেখানে তারা চিরস্থায়ী হবে; এটাই মহাসাফল্য। আত্-তাগাবুন, ৬৪/৯
يَوْمَ تَرَى الْمُؤْمِنِينَ وَالْمُؤْمِنَاتِ يَسْعَى نُورُهُمْ بَيْنَ أَيْدِيهِمْ وَبِأَيْمَانِهِمْ بُشْرَاكُمُ الْيَوْمَ جَنَّاتٌ تَجْرِي مِنْ تَحْتِهَا الأنْهَارُ خَالِدِينَ فِيهَا ذَلِكَ هُوَ الْفَوْزُ الْعَظِيمُ
সেদিন মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীদের আপনি দেখতে পাবেন তাদের সামনে ও তাদের ডানপার্শ্বে তাদের জ্যোতি ছুটোছুটি করছে, (বলা হবে) আজ তোমাদের সুসংবাদ হল জান্নাত, যার তলদেশে নহরসমূহ প্রবাহিত হবে, তারা সেখানে চিরকাল থাকবে, এটাই মহাসাফল্য। আল-হাদীদ, ৫৭/১২
هُوَ الَّذِي أَنْزَلَ السَّكِينَةَ فِي قُلُوبِ الْمُؤْمِنِينَ لِيَزْدَادُوا إِيمَانًا مَعَ إِيمَانِهِمْ وَلِلَّهِ جُنُودُ السَّمَاوَاتِ وَالأرْضِ وَكَانَ اللَّهُ عَلِيمًا حَكِيمًا لِيُدْخِلَ الْمُؤْمِنِينَ وَالْمُؤْمِنَاتِ جَنَّاتٍ تَجْرِي مِنْ تَحْتِهَا الأنْهَارُ خَالِدِينَ فِيهَا وَيُكَفِّرَ عَنْهُمْ سَيِّئَاتِهِمْ وَكَانَ ذَلِكَ عِنْدَ اللَّهِ فَوْزًا عَظِيمًا
তিনিই মুমিনদের অন্তরে প্রশান্তি নাযিল করেন যেন তাদের ঈমানের সাথে ঈমান বৃদ্ধি পায়, আর আসমানসমূহ ও জমিনের বাহিনীসমূহ আল্লাহরই এবং আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়। যেন তিনি মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীদের জান্নাতে প্রবেশ করান, যার তলদেশে নহরসমূহ প্রবাহিত হবে, তারা সেখানে চিরকাল থাকবে, আর তিনি তাদের গুনাহসমূহ মোচন করে দিবেন, আর এটি হল আল্লাহর নিকট মহাসাফল্য। আল-ফাত্হ, ৪৮/৪-৫
إِلا الَّذِينَ تَابُوا وَأَصْلَحُوا وَاعْتَصَمُوا بِاللَّهِ وَأَخْلَصُوا دِينَهُمْ لِلَّهِ فَأُولَئِكَ مَعَ الْمُؤْمِنِينَ وَسَوْفَ يُؤْتِ اللَّهُ الْمُؤْمِنِينَ أَجْرًا عَظِيمًا
তবে যারা তওবা করেছে, নিজেদেরকে সংশোধন করেছে, আল্লাহর রজ্জুকে সুদৃঢ়ভাবে আঁকড়ে ধরেছে এবং আল্লাহর জন্য নিজেদের দীনকে একনিষ্ঠভাবে গ্রহণ করেছে তারা মুমিনদের সাথে থাকবে আর অচিরেই আল্লাহ মুমিনদেরকে মহাপুরস্কার দান করবেন। আন-নিসা, ৪/১৪৬
ঈমান, মুমিন শব্দের শাব্দিক বিশ্লেষণঃ
ঈমান শব্দটি (أ م ن) ধাতু থেকে এসেছে। ঈমান শব্দের form I verb হল أَمِنَ (আমিনা) যার অর্থ নিরাপদ থাকা, নিরাপদ হওয়া, নিশ্চিন্ত থাকা। বিশ্বাস করা, বিশ্বাস স্থাপন করা, বিশ্বাস রাখা, আমানত রাখা। এর form IV verb ءَامَنَ (আ-মানা) যার অর্থ বিশ্বাস করা, বিশ্বাস স্থাপন করা, আস্থা রাখা, ঈমান আনা। নিরাপত্তা দেওয়া, আশঙ্কামুক্ত হওয়া। এর noun أَمْن (আমন) যার অর্থ নিরাপত্তা, আশংকামুক্তি, শান্তি। এর noun أَمِين (আমী-ন) যার অর্থ বিশ্বাসী, বিস্বস্ত, আমানতদার, নিরাপদ, নিশ্চিন্ত। আমীন! কবুল করুন! এর active participle ءَامِن (আ-মিন) যার অর্থ নিরাপদ, নিশ্চিন্ত, আশঙ্কামুক্ত, শান্তিপূর্ণ। এর passive participle مَأْمُون (মা’মু-ন) যার অর্থ নিরাপদ, বিপদমুক্ত, বিশ্বস্ত, বিশ্বাসযোগ্য। এর form IV verbal noun إيمَان (ঈমান) যার অর্থ বিশ্বাস, আস্থা, প্রত্যয়, ধর্মীয় বিশ্বাস, ঈমান। এর form IV active participle مُؤْمِن (মুমিন) যার অর্থ বিশ্বাসী, মুমিন, ঈমানদার, আস্থাশীল, আস্থাবান।
ঈমানের সংজ্ঞাঃ
আল্লামা হাফেজ ইবনে হাজার (রহিমাহুল্লাহ) বলেন- ঈমানের শাব্দিক অর্থ হল বিশ্বাস করা।(ফতহুল বারী খ:১, পৃ:৬০)
শায়খুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, ঈমানের ব্যুৎপত্তিগত অর্থ হচ্ছে স্বীকারোক্তি এবং আত্মার প্রশান্তি। আর সেটা অর্জিত হবে অন্তরে দৃঢ় বিশ্বাস পোষণ ও আমলের মাধ্যমে।
ঈমানের পারিভাষিক অর্থ: পারিভাষিক অর্থে আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামা‘আতের নিকট ঈমান হল মূল ও শাখাসহ হৃদয়ে বিশ্বাস, মুখে স্বীকৃতি ও কর্মে বাস্তবায়নের সমন্বিত নাম। প্রথম দু’টি মূল ও শেষেরটি হ’ল শাখা, যেটা না থাকলে পূর্ণ মুমিন হওয়া যায় না।
পূর্ববর্তী ওলামাগণ যেমন: ইবনে ওয়াইনা, সাওরী, জুরাইজ, মুজাহিদ, মালেক ইবনে আনাস প্রমুখের নিকট ঈমান হলো অন্তরে এক আল্লাহর বিশ্বাস স্থাপন, মুখে উচ্চারণ বা স্বীকার এবং তা আমলে পরিণত করার নাম। (ফতহুল বারী খ:১, পৃ:৬১)
ঈমান হচ্ছে জিব দিয়ে বলা এবং অঙ্গ প্রত্যঙ্গ দিয়ে করা আর অন্তর দিয়ে বিশ্বাস করা। (আশ-শরীয়াহ, ১৩১ পৃষ্ঠা)
দুই বিখ্যাত সাহাবী আলী ইবনে আবী তালিব এবং আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহুমা) বলেন, বিনা কাজে শুধু কথা ফায়দা দেয় না এবং বিনা কথায় কাজও হয় না। আর বলা ও করা বিনা নিয়তে বা মন থেকে হয় না। আর নিয়তও রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর তরীকা তথা সুন্নাত মোতাবেক না হলে তা সঠিক হয় না। (আশ-শরীয়াহ, ১৩১ পৃষ্ঠা)
এজন্য নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত এবং তাঁর সাহাবীদের একটি দল থেকে বর্ণিত আর অধিকাংশ তাবিঈ থেকে বর্ণিত আছে যে, ঈমান হচ্ছে- তাস্বদীকুম বিলকালব (অন্তরে সত্য জানা) – ক্বওলুম বিললিসান (জিব দ্বারা বলা) এবং আমালুম বিলজাওয়া-রিহ (অঙ্গ প্রত্যঙ্গ দ্বারা তা কাজে পরিণত করা) আর যারা এ কথা বলে না তারা ওদের মতে কুফরী করে। (আশ-শরীয়াহ, ১৩০ পৃষ্ঠা)
আজিরী (রহিমাহুল্লাহ) স্বীয় গ্রন্থ “আশ-শারীয়াহ” এর মধ্যে উল্লেখ করেছেন, জেনে রাখ, ঈমানের মৌখিক স্বীকৃতি ব্যতীত শুধুমাত্র অন্তর দ্বারা পরিচয় লাভ করা ও বিশ্বাস করা যথেষ্ট নয় এবং অঙ্গ প্রত্যঙ্গের আমল ব্যতীত শুধুমাত্র অন্তর দ্বারা পরিচয় লাভ করা ও মৌখিক স্বীকৃতি দেয়া যথেষ্ট নয়। যখন কোন ব্যক্তির মধ্যে এই তিনটি বৈশিষ্ট্য একত্রে পাওয়া যাবে তখন সে মুমিন হবে।
বাগ্বী (রহিমাহুল্লাহ) বলেছেনঃ সাহাবা, তাবিঈ ও পরবর্তী আহলুস সুন্নাহ-এর আলিমগণ ঐক্যমত পোষণ করেছেন যে, আমল (অর্থাৎ কর্ম) ঈমানের অন্তর্ভুক্ত। তাঁরা আরো বলেছেনঃ ঈমান হচ্ছে কথা, কর্ম ও বিশ্বাস।
সাহল ইবনে আব্দুল্লাহ তাসতারী (রহিমাহুল্লাহ)-কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল যে, ঈমান কী? তিনি বলেন কথা ও কাজ এবং মনন ও সুন্নত।
শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, “ঈমান যখন বিনা কাজে শুধু কথাতে হবে তখন তা কুফরী হবে। আর যখন তা শুধু কথা ও কাজে হবে বিনা মননে (নিয়তে) তখন তা মুনাফেকী হবে। আর যখন তা সুন্নাত মোতাবেক না হয়ে কেবল কথা ও কাজ এবং নিয়ত অনুযায়ী হবে তখন তা বিদআত ও মনগড়া হবে। (কিতাবুল ঈমান, ১৫২ পৃষ্ঠা)
সুতরাং ঈমানের সংজ্ঞা হল: মুখে উচ্চারণ, অন্তরে বিশ্বাস ও অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের মাধ্যমে কাজে পরিণত করা। আনুগত্য ও সৎ আমলের মাধ্যমে ঈমান বাড়ে এবং পাপাচার ও নাফরমানীর মাধ্যমে ঈমান কমে যায়।
ঈমানের রোকনঃ ঈমানের রোকন ছয়টি। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-
الإيمان أن تؤمن بالله، وملائكته، وكتبه، ورسله، واليوم الآخر. وتؤمن بالقدر خيره .وشره
ঈমান হলো- তুমি বিশ্বাস করবে আল্লাহর প্রতি, তাঁর ফিরিশতাগণের প্রতি, তাঁর কিতাব সমূহের প্রতি, তাঁর রাসূলগণের প্রতি ও শেষ দিবসের (আখিরাতের) প্রতি এবং ভাগ্যের (তাকদীরের) ভাল মন্দের প্রতি বিশ্বাস করবে। [সহীহ মুসলিম হাদীস নং-১, হযরত উমর ইবনুল খাত্তাব রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত]
ঈমানের শাখাঃ
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
الإِيمَانُ بِضْعٌ وَسَبْعُونَ أَوْ بِضْعٌ وَسِتُّونَ شُعْبَةً فَأَفْضَلُهَا قَوْلُ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَأَدْنَاهَا إِمَاطَةُ الأَذَى عَنِ الطَّرِيقِ وَالْحَيَاءُ شُعْبَةٌ مِنَ الإِيمَانِ
ঈমানের শাখা সত্তরটিরও কিছু বেশি অথবা ষাটটিরও কিছু বেশি, এর সর্বোচ্চ শাখা হচ্ছে “আল্লাহ ব্যতিত ইলাহ নেই” এ কথা স্বীকার করা, আর এর সর্বনিম্ন শাখা হচ্ছে রাস্তা থেকে কষ্টদায়ক বস্তু অপসারণ করা আর লজ্জা ঈমানের বিশিষ্ট একটি শাখা। সহীহ মুসলিম: ৫৯
আবু হুরায়রা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন যে, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
الإِيمَانُ بِضْعٌ وَسَبْعُونَ شُعْبَةً وَالْحَيَاءُ شُعْبَةٌ مِنَ الإِيمَانِ
ঈমানের শাখা সত্তরটিরও কিছু বেশি আর লজ্জা ঈমানের একটি শাখা। সহীহ মুসলিম: ৫৮
ঈমানের হ্রাস-বৃদ্ধিঃ
আনুগত্য ও সৎ আমলের মাধ্যমে ঈমান বাড়ে এবং পাপাচার ও নাফরমানীর মাধ্যমে ঈমান কমে যায়। আল্লাহ বলেছেন-
إِنَّمَا الْمُؤْمِنُونَ الَّذِينَ إِذَا ذُكِرَ اللَّهُ وَجِلَتْ قُلُوبُهُمْ وَإِذَا تُلِيَتْ عَلَيْهِمْ آيَاتُهُ زَادَتْهُمْ إِيمَانًا وَعَلَى رَبِّهِمْ يَتَوَكَّلُونَ
আসলে মুমিন তারাই, যখন আল্লাহর স্মরণ করা হয় তখন তাদের অন্তরসমূহ কেঁপে উঠে আর যখন তাদের কাছে তাঁর আয়াতসমূহ পাঠ করা হয় তখন তাদের ঈমান বৃদ্ধি পায় আর তারা তাদের রবের উপর ভরসা করে। আল-আনফাল, ৮/২
هُوَ الَّذِي أَنْزَلَ السَّكِينَةَ فِي قُلُوبِ الْمُؤْمِنِينَ لِيَزْدَادُوا إِيمَانًا مَعَ إِيمَانِهِمْ
তিনি মুমিনদের অন্তরে প্রশান্তি নাযিল করেন, যাতে তাদের ঈমানের সাথে আরো ঈমান বেড়ে যায়। আল-ফাত্হ ৪৮/৪
সুতরাং আনুগত্য ও নৈকট্যশীলতা যত বৃদ্ধি পায়, ঈমানও তত বৃদ্ধি পায়। আর আনুগত্য ও নৈকট্যশীলতা যত হ্রাস পায় ঈমানও তত হ্রাস পায়।
কুরআনে মুমিনদের পরিচয়ঃ
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا آمِنُوا بِاللَّهِ وَرَسُولِهِ وَالْكِتَابِ الَّذِي نَزَّلَ عَلَى رَسُولِهِ وَالْكِتَابِ الَّذِي أَنْزَلَ مِنْ قَبْلُ وَمَنْ يَكْفُرْ بِاللَّهِ وَمَلائِكَتِهِ وَكُتُبِهِ وَرُسُلِهِ وَالْيَوْمِ الآخِرِ فَقَدْ ضَلَّ ضَلالا بَعِيدً
হে মুমিনগণ, তোমরা ঈমান আন আল্লাহর প্রতি ও তাঁর রাসূলের প্রতি আর সে কিতাবের প্রতি যা তিনি তাঁর রাসূলের উপর নাযিল করেছেন এবং ঐ কিতাবের প্রতি যা তিনি পূর্বে নাযিল করেছেন আর যে আল্লাহকে ও তাঁর ফেরেশতাদেরকে ও তাঁর কিতাবসমূহকে ও তাঁর রাসূলগণকে এবং শেষ দিবসকে অস্বীকার করবে, সে বহুদূরে পথভ্রষ্টতায় পথভ্রষ্ট হয়েছে। আন-নিসা, ৪/১৩৬
.
وَالْمُؤْمِنُونَ كُلٌّ آمَنَ بِاللَّهِ وَمَلائِكَتِهِ وَكُتُبِهِ وَرُسُلِهِ لا نُفَرِّقُ بَيْنَ أَحَدٍ مِنْ رُسُلِهِ وَقَالُوا سَمِعْنَا وَأَطَعْنَا غُفْرَانَكَ رَبَّنَا وَإِلَيْكَ الْمَصِيرُ
আর মুমিনগণ প্রত্যেকে ঈমান এনেছে আল্লাহর প্রতি, তাঁর ফেরেশতাগণের প্রতি, তাঁর কিতাবসমূহের প্রতি ও তাঁর রাসূলগণের প্রতি, (তারা বলে) ‘আমরা তাঁর রাসূলগণের কারও মধ্যে তারতম্য করি না’, তারা আরও বলে, ‘আমরা শুনলাম এবং মেনে নিলাম, হে আমাদের রব! আপনি আমাদের ক্ষমা করুন, আর আপনার কাছেই প্রত্যাবর্তনস্থল’। আল-বাকারাহ, ২/২৮৫
.
لَكِنِ الرَّاسِخُونَ فِي الْعِلْمِ مِنْهُمْ وَالْمُؤْمِنُونَ يُؤْمِنُونَ بِمَا أُنْزِلَ إِلَيْكَ وَمَا أُنْزِلَ مِنْ قَبْلِكَ وَالْمُقِيمِينَ الصَّلاةَ وَالْمُؤْتُونَ الزَّكَاةَ وَالْمُؤْمِنُونَ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الآخِرِ أُولَئِكَ سَنُؤْتِيهِمْ أَجْرًا عَظِيمًا
কিন্তু তাদের মধ্যে যারা জ্ঞানে পরিপক্ক এবং মুমিনগণ ঈমান আনে যা আপনার প্রতি নাযিল করা হয়েছে আর যা আপনার পূর্বে নাযিল করা হয়েছে এবং তারা সালাত প্রতিষ্ঠাকারী ও যাকাত প্রদানকারী আর তারা আল্লাহর প্রতি ও শেষ দিবসের প্রতি ঈমান আনয়নকারী, তাদেরকে অচিরেই আমি মহাপুরস্কার প্রদান করব। আন-নিসা, ৪/১৬২
মুমিনদের বৈশিষ্ট্যঃ
طس تِلْكَ آيَاتُ الْقُرْآنِ وَكِتَابٍ مُبِينٍ هُدًى وَبُشْرَى لِلْمُؤْمِنِينَ الَّذِينَ يُقِيمُونَ الصَّلاةَ وَيُؤْتُونَ الزَّكَاةَ وَهُمْ بِالآخِرَةِ هُمْ يُوقِنُونَ
ত্বা-সীন; এগুলো আল-কুরআনের ও সুস্পষ্ট কিতাবের আয়াত। মুমিনদের জন্যে হেদায়াত ও সুসংবাদ। তারা সালাত কায়েম করে ও যাকাত প্রদান করে এবং তারা পরকালের প্রতি নিশ্চিত বিশ্বাস রাখে। আন্-নামল, ২৭/১-৩
.
قَدْ أَفْلَحَ الْمُؤْمِنُونَ الَّذِينَ هُمْ فِي صَلاتِهِمْ خَاشِعُونَ وَالَّذِينَ هُمْ عَنِ اللَّغْوِ مُعْرِضُونَ وَالَّذِينَ هُمْ لِلزَّكَاةِ فَاعِلُونَ وَالَّذِينَ هُمْ لِفُرُوجِهِمْ حَافِظُونَ إِلا عَلَى أَزْوَاجِهِمْ أوْ مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُهُمْ فَإِنَّهُمْ غَيْرُ مَلُومِينَ فَمَنِ ابْتَغَى وَرَاءَ ذَلِكَ فَأُولَئِكَ هُمُ الْعَادُونَ وَالَّذِينَ هُمْ لأمَانَاتِهِمْ وَعَهْدِهِمْ رَاعُونَ وَالَّذِينَ هُمْ عَلَى صَلَوَاتِهِمْ يُحَافِظُونَ أُولَئِكَ هُمُ الْوَارِثُونَ الَّذِينَ يَرِثُونَ الْفِرْدَوْسَ هُمْ فِيهَا خَالِدُونَ
অবশ্যই মুমিনগণ সফল হয়েছে। যারা তাদের সালাতে বিনয়ী-নম্র-ভীত। আর যারা অনর্থক কথাবার্তা থেকে বিরত থাকে। আর যারা যাকাত দানের ক্ষেত্রে সক্রিয়। আর যারা তাদের লজ্জাস্থানের হিফাযতকারী। তবে তাদের স্ত্রীদের ও তাদের ডান হাত যার মালিক হয়েছে (দাসীদের) সে ক্ষেত্রে তারা নিন্দনীয় নয়। অতঃপর যারা এছাড়া অন্যকে কামনা করবে তারাই সীমালংঘনকারী। আর যারা তাদের আমানতসমূহের ও ওয়াদার সংরক্ষণকারী। আর যারা তাদের সালাতসমূহের হেফাজত করে। তারাই হল উত্তরাধিকারী। যারা ফিরদাউসের উত্তরাধিকার লাভ করবে, তারা তাতে চিরস্থায়ী হবে। মু’মিনুন, ২৩/১-১১
.
وَالْمُؤْمِنُونَ وَالْمُؤْمِنَاتُ بَعْضُهُمْ أَوْلِيَاءُ بَعْضٍ يَأْمُرُونَ بِالْمَعْرُوفِ وَيَنْهَوْنَ عَنِ الْمُنْكَرِ وَيُقِيمُونَ الصَّلاةَ وَيُؤْتُونَ الزَّكَاةَ وَيُطِيعُونَ اللَّهَ وَرَسُولَهُ أُولَئِكَ سَيَرْحَمُهُمُ اللَّهُ إِنَّ اللَّهَ عَزِيزٌ حَكِيمٌ
আর মুমিন পুরুষ ও মুমিন, নারী তারা একে অপরের বন্ধু, তারা ভাল কাজের আদেশ দেয় ও অন্যায় কাজ হতে নিষেধ করে, আর তারা সালাত প্রতিষ্ঠা করে আর যাকাত প্রদান করে এবং আল্লাহ ও রাসূলের আনুগত্য করে, তাদের উপর আল্লাহ শীঘ্রই দয়া করবেন, নিশ্চয় আল্লাহ পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়। আত্-তাওবাহ, ৯/৭১
.
التَّائِبُونَ الْعَابِدُونَ الْحَامِدُونَ السَّائِحُونَ الرَّاكِعُونَ السَّاجِدُونَ الآمِرُونَ بِالْمَعْرُوفِ وَالنَّاهُونَ عَنِ الْمُنْكَرِ وَالْحَافِظُونَ لِحُدُودِ اللَّهِ وَبَشِّرِ الْمُؤْمِنِينَ
তারা তওবাকারী, ইবাদতকারী, আল্লাহর প্রশংসাকারী, সিয়াম পালনকারী, রুকুকারী, সেজদা আদায়কারী, সৎকাজের আদেশ দানকারী ও মন্দ কাজ থেকে নিষেধকারী এবং আল্লাহর নির্ধারিত সীমারেখা হেফাযতকারী আর মুমিনদেরকে সুসংবাদ দাও। আত্-তাওবাহ, ৯/১১২
মুমিনদের স্তরঃ
ثُمَّ أَوْرَثْنَا الْكِتَابَ الَّذِينَ اصْطَفَيْنَا مِنْ عِبَادِنَا فَمِنْهُمْ ظَالِمٌ لِنَفْسِهِ وَمِنْهُمْ مُقْتَصِدٌ وَمِنْهُمْ سَابِقٌ بِالْخَيْرَاتِ بِإِذْنِ اللَّهِ ذَلِكَ هُوَ الْفَضْلُ الْكَبِيرُ
অতঃপর আমি আমার বান্দাদের মধ্য হতে তাদেরকে কিতাবের অধিকারী করলাম যাদেরকে আমি বেছে নিয়েছি, তবে তাদের মধ্যে কতক নিজের প্রতি যুলুম করেছে আবার কতক মধ্যপন্থা অবলম্বন করেছে আবার কতক আল্লাহর ইচ্ছায় কল্যাণের কাজে অগ্রসর হয়েছে। এটাই মহা অনুগ্রহ। ফাত্বির, ৩৫/৩২
ঈমানের হ্রাস-বৃদ্ধির আয়াতগুলো দিয়ে বুঝা যায় ঈমানের স্তর রয়েছে। উপরের আয়াত থেকে বুঝা যায় মহান আল্লাহ ঈমানের দিক দিয়ে মুমিন বান্দাদের তিনটি স্তরে ভাগ করেছেন। যথা:
১. সাধারণ মুমিন।
২. মধ্যপন্থী মুমিন।
৩. অগ্রবর্তী মুমিন।
প্রকৃত মুমিন কারা?
إِنَّمَا الْمُؤْمِنُونَ الَّذِينَ إِذَا ذُكِرَ اللَّهُ وَجِلَتْ قُلُوبُهُمْ وَإِذَا تُلِيَتْ عَلَيْهِمْ آيَاتُهُ زَادَتْهُمْ إِيمَانًا وَعَلَى رَبِّهِمْ يَتَوَكَّلُونَ الَّذِينَ يُقِيمُونَ الصَّلاةَ وَمِمَّا رَزَقْنَاهُمْ يُنْفِقُونَ أُولَئِكَ هُمُ الْمُؤْمِنُونَ حَقًّا لَهُمْ دَرَجَاتٌ عِنْدَ رَبِّهِمْ وَمَغْفِرَةٌ وَرِزْقٌ كَرِيمٌ
আসলে মুমিন তারাই, যখন আল্লাহর স্মরণ করা হয় তখন তাদের অন্তরসমূহ কেঁপে উঠে আর যখন তাদের কাছে তাঁর আয়াতসমূহ পাঠ করা হয় তখন তাদের ঈমান বৃদ্ধি পায় আর তারা তাদের রবের উপর ভরসা করে। যারা সালাত প্রতিষ্ঠা করে এবং আমি তাদেরকে যে জীবিকা দিয়েছি তা থেকে ব্যয় করে। তারাই হল প্রকৃত মুমিন, তাদের রবের নিকট তাদের জন্য রয়েছে উচ্চ মর্যাদাসমূহ আর ক্ষমা ও সম্মানজনক জীবিকা। আল-আনফাল, ৮/২-৪
وَالَّذِينَ آمَنُوا وَهَاجَرُوا وَجَاهَدُوا فِي سَبِيلِ اللَّهِ وَالَّذِينَ آوَوْا وَنَصَرُوا أُولَئِكَ هُمُ الْمُؤْمِنُونَ حَقًّا لَهُمْ مَغْفِرَةٌ وَرِزْقٌ كَرِيمٌ
এবং যারা ঈমান এনেছে আর হিজরত করেছে আর আল্লাহর পথে জিহাদ করেছে আর যারা আশ্রয় দিয়েছে ও সাহায্য করেছে (আনসার) তারাই হল প্রকৃত মুমিন, তাদের জন্য রয়েছে সম্মানজনক জীবিকা। আল-আনফাল, ৮/৭৪
إِنَّمَا الْمُؤْمِنُونَ الَّذِينَ آمَنُوا بِاللَّهِ وَرَسُولِهِ ثُمَّ لَمْ يَرْتَابُوا وَجَاهَدُوا بِأَمْوَالِهِمْوَأَنْفُسِهِمْ فِي سَبِيلِ اللَّهِ أُولَئِكَ هُمُ الصَّادِقُونَ
প্রকৃত মুমিন তারাই যারা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের প্রতি ঈমান এনেছে, এরপর সন্দেহ পোষণ করেনি এবং তাদের সম্পদ ও তাদের জীবন দিয়ে আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করেছে, তারাই সত্যবাদী। আল-হুজুরাত, ৪৯/১৫
মুমিনদের উক্তি
إِنَّمَا كَانَ قَوْلَ الْمُؤْمِنِينَ إِذَا دُعُوا إِلَى اللَّهِ وَرَسُولِهِ لِيَحْكُمَ بَيْنَهُمْ أَنْ يَقُولُوا سَمِعْنَا وَأَطَعْنَا وَأُولَئِكَ هُمُ الْمُفْلِحُونَ
মুলত মুমিনদের উক্তি হল, যখন তাদের মাঝে ফায়সালা করে দেবার জন্যে আল্লাহ ও তাঁর রসূলের দিকে আহবান করা হয়, তখন তারা বলে, ‘আমরা শুনলাম ও মেনে নিলাম’ আর তারাই সফলকাম। আন-নূর, ২৪/৫১
মুমিনরাই হল মুসলিম
الَّذِينَ آمَنُوا بِآيَاتِنَا وَكَانُوا مُسْلِمِينَ
যারা আমার আয়াতসমূহের প্রতি বিশ্বাসী ছিল (অর্থাৎ মুমিন ছিল) আর তারা ছিল অনুগত (মুসলিম)। আয্-যুখরুফ, ৪৩/৬৯
মুমিনদের প্রতিদানঃ
وَبَشِّرِ الْمُؤْمِنِينَ بِأَنَّ لَهُمْ مِنَ اللَّهِ فَضْلا كَبِيرًا
আর মুমিনদের সুসংবাদ দাও যে, তাদের জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে রয়েছে বিরাট অনুগ্রহ। আল-আহযাব, ৩৩/৪৭
فَمَنْ يَعْمَلْ مِنَ الصَّالِحَاتِ وَهُوَ مُؤْمِنٌ فَلا كُفْرَانَ لِسَعْيِهِ وَإِنَّا لَهُ كَاتِبُونَ
সুতরাং যে মুমিন হয়ে সৎকাজ করে তবে তার প্রচেষ্টাকে অস্বীকার করা হবে না আর আমি তা লিখে রাখি। আল-আম্বিয়া, ২১/৯৪
وَمَنْ يَعْمَلْ مِنَ الصَّالِحَاتِ وَهُوَ مُؤْمِنٌ فَلا يَخَافُ ظُلْمًا وَلا هَضْمًا
যে মুমিন অবস্থায় সৎকর্ম করবে সে যুলুম ও ক্ষতির আশঙ্কা করবে না। ত্ব-হা, ২০/১১২
وَمَنْ أَرَادَ الآخِرَةَ وَسَعَى لَهَا سَعْيَهَا وَهُوَ مُؤْمِنٌ فَأُولَئِكَ كَانَ سَعْيُهُمْ مَشْكُورًا
আর যে আখেরাত চায় আর মুমিন হয়ে যথাযথ চেষ্টা-সাধনা করে তবে তার প্রচেষ্টা স্বীকৃত হবে। আল-ইস্রা, ১৭/১৯
وَعَنَتِ الْوُجُوهُ لِلْحَيِّ الْقَيُّومِ وَقَدْ خَابَ مَنْ حَمَلَ ظُلْمًا وَمَنْ يَعْمَلْ مِنَ الصَّالِحَاتِ وَهُوَ مُؤْمِنٌ فَلا يَخَافُ ظُلْمًا وَلا هَضْمًا
আর (সেদিন) চিরঞ্জীব, চিরস্থায়ী আল্লাহর সামনে সকল মুখমন্ডল অবনত হবে আর সে অবশ্যই ব্যর্থ হবে যে জুলুমের (গুনাহর) বোঝা বহন করবে। আর যে মুমিন অবস্থায় সৎকর্ম করে তবে সে জুলুম ও ক্ষতির আশঙ্কা করবে না। ত্ব-হা, ২০/১১১-১১২
مَنْ عَمِلَ سَيِّئَةً فَلا يُجْزَى إِلا مِثْلَهَا وَمَنْ عَمِلَ صَالِحًا مِنْ ذَكَرٍ أَوْ أُنْثَى وَهُوَ مُؤْمِنٌ فَأُولَئِكَ يَدْخُلُونَ الْجَنَّةَ يُرْزَقُونَ فِيهَا بِغَيْرِ حِسَابٍ
যে মন্দ কাজ করে তাকে অনুরূপ প্রতিফল দেয়া হবে, আর পুরুষ কিংবা নারী যে মুমিন হয়ে সৎকর্ম করে তবে তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে, সেখানে তাদেরকে বে-হিসাব রিযিক দেয়া হবে। আল-মুমিন, ৪০/৪০
وَمَنْ يَعْمَلْ مِنَ الصَّالِحَاتِ مِنْ ذَكَرٍ أَوْ أُنْثَى وَهُوَ مُؤْمِنٌ فَأُولَئِكَ يَدْخُلُونَ الْجَنَّةَ وَلا يُظْلَمُونَ نَقِيرًا
আর পুরুষ কিংবা নারীর মধ্যে যে মুমিন হয়ে সৎকর্ম করবে তবে তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে আর তাদের প্রতি সামান্য পরিমানও যুলুম করা হবে না। আন-নিসা, ৪/১২৪
مَنْ عَمِلَ صَالِحًا مِنْ ذَكَرٍ أَوْ أُنْثَى وَهُوَ مُؤْمِنٌ فَلَنُحْيِيَنَّهُ حَيَاةً طَيِّبَةً وَلَنَجْزِيَنَّهُمْ أَجْرَهُمْ بِأَحْسَنِ مَا كَانُوا يَعْمَلُونَ
পুরুষ কিংবা নারীর মধ্যে যে মুমিন হয়ে সৎকর্ম করে তবে তাকে আমি পবিত্র জীবন দান করব এবং তারা যা করত তার জন্য অবশ্যই আমি তাদেরকে অতি উত্তম প্রতিদান দেব। আন্-নাহ্ল, ১৬/৯৭
وَمَنْ يَأْتِهِ مُؤْمِنًا قَدْ عَمِلَ الصَّالِحَاتِ فَأُولَئِكَ لَهُمُ الدَّرَجَاتُ الْعُلَى جَنَّاتُ عَدْنٍ تَجْرِي مِنْ تَحْتِهَا الأنْهَارُ خَالِدِينَ فِيهَا وَذَلِكَ جَزَاءُ مَنْ تَزَكَّى
আর যারা তাঁর কাছে আসে মুমিন হয়ে সৎকর্ম করে, তাদের জন্য রয়েছে সুউচ্চ মর্যাদা, চিরস্থায়ী জান্নাত যার তলদেশে নহরসমূহ প্রবাহিত হবে, তারা সেখানে চিরকাল থাকবে, আর এটাই তাদের পুরস্কার যারা পবিত্র হবে। ত্ব-হা, ২০/৭৫-৭৬
وَعَدَ اللَّهُ الْمُؤْمِنِينَ وَالْمُؤْمِنَاتِ جَنَّاتٍ تَجْرِي مِنْ تَحْتِهَا الأنْهَارُ خَالِدِينَ فِيهَا وَمَسَاكِنَ طَيِّبَةً فِي جَنَّاتِ عَدْنٍ وَرِضْوَانٌ مِنَ اللَّهِ أَكْبَرُ ذَلِكَ هُوَ الْفَوْزُ الْعَظِيمُ
আল্লাহ মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীদের জান্নাতের ওয়াদা দিয়েছেন, যার তলদেশে নহরসমূহ প্রবাহিত হবে, তারা সেখানে চিরকাল থাকবে, আরও (ওয়াদা দিচ্ছেন) চিরস্থায়ী জান্নাতে পবিত্র বাসস্থানের আর সবচেয়ে বড় হল আল্লাহর পক্ষ হতে সন্তুষ্টি, এটাই মহাসাফল্য। আত্-তাওবাহ, ৯/৭২
وَمَنْ يُؤْمِنْ بِاللَّهِ وَيَعْمَلْ صَالِحًا يُكَفِّرْ عَنْهُ سَيِّئَاتِهِ وَيُدْخِلْهُ جَنَّاتٍ تَجْرِي مِنْ تَحْتِهَا الأنْهَارُ خَالِدِينَ فِيهَا أَبَدًا ذَلِكَ الْفَوْزُ الْعَظِيمُ
আর যারা আল্লাহর প্রতি ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে তিনি তার পাপসমূহ মোচন করে দিবেন এবং তাকে প্রবেশ করাবেন জান্নাতসমূহে, যার পাদদেশ দিয়ে ঝর্ণাধারা প্রবাহিত, সেখানে তারা চিরস্থায়ী হবে; এটাই মহাসাফল্য। আত্-তাগাবুন, ৬৪/৯
يَوْمَ تَرَى الْمُؤْمِنِينَ وَالْمُؤْمِنَاتِ يَسْعَى نُورُهُمْ بَيْنَ أَيْدِيهِمْ وَبِأَيْمَانِهِمْ بُشْرَاكُمُ الْيَوْمَ جَنَّاتٌ تَجْرِي مِنْ تَحْتِهَا الأنْهَارُ خَالِدِينَ فِيهَا ذَلِكَ هُوَ الْفَوْزُ الْعَظِيمُ
সেদিন মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীদের আপনি দেখতে পাবেন তাদের সামনে ও তাদের ডানপার্শ্বে তাদের জ্যোতি ছুটোছুটি করছে, (বলা হবে) আজ তোমাদের সুসংবাদ হল জান্নাত, যার তলদেশে নহরসমূহ প্রবাহিত হবে, তারা সেখানে চিরকাল থাকবে, এটাই মহাসাফল্য। আল-হাদীদ, ৫৭/১২
هُوَ الَّذِي أَنْزَلَ السَّكِينَةَ فِي قُلُوبِ الْمُؤْمِنِينَ لِيَزْدَادُوا إِيمَانًا مَعَ إِيمَانِهِمْ وَلِلَّهِ جُنُودُ السَّمَاوَاتِ وَالأرْضِ وَكَانَ اللَّهُ عَلِيمًا حَكِيمًا لِيُدْخِلَ الْمُؤْمِنِينَ وَالْمُؤْمِنَاتِ جَنَّاتٍ تَجْرِي مِنْ تَحْتِهَا الأنْهَارُ خَالِدِينَ فِيهَا وَيُكَفِّرَ عَنْهُمْ سَيِّئَاتِهِمْ وَكَانَ ذَلِكَ عِنْدَ اللَّهِ فَوْزًا عَظِيمًا
তিনিই মুমিনদের অন্তরে প্রশান্তি নাযিল করেন যেন তাদের ঈমানের সাথে ঈমান বৃদ্ধি পায়, আর আসমানসমূহ ও জমিনের বাহিনীসমূহ আল্লাহরই এবং আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়। যেন তিনি মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীদের জান্নাতে প্রবেশ করান, যার তলদেশে নহরসমূহ প্রবাহিত হবে, তারা সেখানে চিরকাল থাকবে, আর তিনি তাদের গুনাহসমূহ মোচন করে দিবেন, আর এটি হল আল্লাহর নিকট মহাসাফল্য। আল-ফাত্হ, ৪৮/৪-৫
إِلا الَّذِينَ تَابُوا وَأَصْلَحُوا وَاعْتَصَمُوا بِاللَّهِ وَأَخْلَصُوا دِينَهُمْ لِلَّهِ فَأُولَئِكَ مَعَ الْمُؤْمِنِينَ وَسَوْفَ يُؤْتِ اللَّهُ الْمُؤْمِنِينَ أَجْرًا عَظِيمًا
তবে যারা তওবা করেছে, নিজেদেরকে সংশোধন করেছে, আল্লাহর রজ্জুকে সুদৃঢ়ভাবে আঁকড়ে ধরেছে এবং আল্লাহর জন্য নিজেদের দীনকে একনিষ্ঠভাবে গ্রহণ করেছে তারা মুমিনদের সাথে থাকবে আর অচিরেই আল্লাহ মুমিনদেরকে মহাপুরস্কার দান করবেন। আন-নিসা, ৪/১৪৬
0 Comments