>>>> ইসলামে বিধবা নারীদের মর্যাদা ও বিয়ের বিধান - কুরআন ও হাদীসের আলোকে পর্যালোচনা <<<<
সংকলনে - সাজ্জাদ সালাদীন
ইসলামে নারী-পুরুষের মধ্যে সম্পর্ক স্থাপনের জন্যে বিয়েই হচ্ছে একমাত্র বৈধ উপায়, একমাত্র বিধিবদ্ধ ব্যবস্থা। বিয়ে ছাড়া অন্য কোনো ভাবে – অন্য পথে – নারী - পুরুষের মিলন ও সম্পর্ক স্থাপন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। বিয়ে হচ্ছে পুরুষ ও নারীর মাঝে সামাজিক পরিবেশে ও সমর্থনে শরীয়ত মুতাবেক অনুষ্ঠিত এমন এক সম্পর্ক স্থাপন যার ফলে দুজনের একত্র বসবাস ও পরস্পরে যৌন সম্পর্ক স্থাপন সম্পূর্ণরূপে বৈধ হয়ে যায়। যার দরুন পরস্পরের ওপর অধিকার আরোপিত হয় এবং পরস্পরের প্রতি দায়িত্ব ও কর্তব্য অবশ্য পালনীয় হয়ে দাঁড়ায়।
শুধু কুমারী বিয়ে করতে হবে; বিধবা বিয়ে করা যাবে না। এটা ঠিক যে, হাদিসে কুমারী বিয়ে করার বিশেষ উৎসাহ এসেছে এবং এর যৌক্তিক কারণও বলা হয়েছে। কেননা অনেক নারী এমন আছেন, যারা বিধবা হওয়ার পর দ্বিতীয়বার স্বামী গ্রহণে
আগ্রহী হন না। কষ্ট হলেও একাকী জীবন যাপন করার পথকেই বেছে নেন। তাদের জন্য সান্ত¦না ও আখেরাতের খুশখবরী জানিয়ে আশ্বস্ত করেছেন রাসূল সাঃ। হাদীসে এসেছে-
ﻋَﻦْ ﻋَﻮْﻑِ ﺑْﻦِ ﻣَﺎﻟِﻚٍ ﺍﻟْﺄَﺷْﺠَﻌِﻲِّ، ﻗَﺎﻝَ : ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ : ﺃَﻧَﺎ ﻭَﺍﻣْﺮَﺃَﺓٌ ﺳَﻔْﻌَﺎﺀُ ﺍﻟْﺨَﺪَّﻳْﻦِ ﻛَﻬَﺎﺗَﻴْﻦِ ﻳَﻮْﻡَ ﺍﻟْﻘِﻴَﺎﻣَﺔِ » ﻭَﺃَﻭْﻣَﺄَ ﻳَﺰِﻳﺪُ ﺑِﺎﻟْﻮُﺳْﻄَﻰ ﻭَﺍﻟﺴَّﺒَّﺎﺑَﺔِ ﺍﻣْﺮَﺃَﺓٌ ﺁﻣَﺖْ ﻣِﻦْ ﺯَﻭْﺟِﻬَﺎ ﺫَﺍﺕُ ﻣَﻨْﺼِﺐٍ، ﻭَﺟَﻤَﺎﻝٍ، ﺣَﺒَﺴَﺖْ ﻧَﻔْﺴَﻬَﺎ ﻋَﻠَﻰ ﻳَﺘَﺎﻣَﺎﻫَﺎ
হযরত আউফ বিন মালিক আশজায়ী রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, আমি এবং কষ্ট ও মেহনতের কারণে বিবর্ণ হয়ে যাওয়া মহিলা কিয়ামতের দিন দুই আঙ্গুলের মত নিকটবর্তী হবো। রাসূল সাঃ তর্জনী ও মধ্যমা পাশাপাশি করে দেখালেন। বংশীয় কৌলিন্য ও সৌন্দর্যের অধিকারিনী যে বিধবা নারী প্রয়োজন থাকা সত্বেও এতিম সন্তানদের লালন পালনের উদ্দেশ্যে দ্বিতীয়বার স্বামী গ্রহণ থেকে নিজেকে বিরত রেখেছে।{সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৫১৪৯}
ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻲ ﻫُﺮَﻳْﺮَﺓَ ﻗَﺎﻝَ : ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ : ” ﺃَﻧَﺎ ﺃَﻭَّﻝُ ﻣَﻦْ ﻳُﻔْﺘَﺢُ ﻟَﻪُ ﺑَﺎﺏُ ﺍﻟْﺠَﻨَّﺔِ، ﺇِﻟَّﺎ ﺃَﻧَّﻪُ ﺗَﺄْﺗِﻲ ﺍﻣْﺮَﺃَﺓٌ ﺗُﺒَﺎﺩِﺭُﻧِﻲ ﻓَﺄَﻗُﻮﻝُ ﻟَﻬَﺎ : ﻣَﺎ ﻟَﻚِ؟ ﻭَﻣَﺎ ﺃَﻧْﺖِ؟ ﻓَﺘَﻘُﻮﻝُ : ﺃَﻧَﺎ ﺍﻣْﺮَﺃَﺓٌ ﻗَﻌَﺪْﺕُ ﻋَﻠَﻰ ﺃَﻳْﺘَﺎﻡٍ ﻟِﻲ
হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ বলেছেন, আমিই ঐ ব্যক্তি যার জন্য সর্ব প্রথম জান্নাতের দরজা খোলা হবে। কিন্তু এক মহিলা এসে আমার আগে জান্নাতে যেতে চাইবে। আমি তাকে জিজ্ঞাসা করবো যে, তোমার কি হল? তুমি কে? তখন সে বলবে, আমি ঐ মহিলা যে স্বীয় এতিমম বাচ্চার লালন পালনের জন্য নিজেকে আটকে রেখেছে [বিবাহ করা থেকে]। {মুসনাদে আবী ইয়ালা, হাদীস নং-৬৬৫১}
যেসব বিধবা বিয়ের যোগ্য বয়সের নয়, আবার তাদের কোন সন্তানও নেই। সেসব বিধবাদের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়াকে অনেক বড় পূণ্যের
কাজ বলে রাসূল সাঃ ঘোষণা দিয়েছেন। যেমন-
ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻲ ﻫُﺮَﻳْﺮَﺓَ، ﻗَﺎﻝَ : ﻗَﺎﻝَ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲُّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ : « ﺍﻟﺴَّﺎﻋِﻲ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻷَﺭْﻣَﻠَﺔِ ﻭَﺍﻟﻤِﺴْﻜِﻴﻦِ، ﻛَﺎﻟْﻤُﺠَﺎﻫِﺪِ ﻓِﻲ
ﺳَﺒِﻴﻞِ ﺍﻟﻠَّﻪِ، ﺃَﻭِ ﺍﻟﻘَﺎﺋِﻢِ ﺍﻟﻠَّﻴْﻞَ ﺍﻟﺼَّﺎﺋِﻢِ ﺍﻟﻨَّﻬَﺎﺭَ »
হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, বিধবা এবং মিসকিনের সহযোগিতাকারী আল্লাহর রাস্তায় জিহাদকারীর ন্যায়, বা সর্বদা রাতে নামাযরত ও দিনের বেলা রোযাদার ব্যক্তির মত। {সহীহ বুখারী, হাদীস নং-৫০৩৮,৫৩৫৩}
এরকম আরো অসংখ্য হাদীস প্রমাণ করে প্রতিটি সামর্থবান ব্যক্তি বিধবা নারীদের যথাযথ সম্মান ও প্রয়োজনে সহযোগিতা করা উচিত। এটাই ইসলামের দাবি এবং মানবতার দাবি।
আসলে স্বামীর মৃত্যুর পর বিধবা নারীর শোকে কাতর হওয়া ছাড়া আর কোনো পথ খোলা থাকে না। নিরাপদ আশ্রয় ও মানবিক মর্যাদা হারানোর কারণে সমাজ-সম্প্রদায়ে পরিপূর্ণ অংশগ্রহণও তার পক্ষে আর সম্ভব হয় না। একজন বিধবা নারী তার উত্তরাধিকার সম্পত্তি, সন্তান, স্বামী, সংসার, দেনমোহর, নিরাপদে কাজ করা, সমাজের কাছে সাহায্য পাওয়া, সামাজিক মর্যাদা পাওয়ার অধিকার রাখেন। কিন্তু তারা এই অধিকারগুলো পাচ্ছেন না। একজন মানুষ হিসেবে বেঁচে থাকার জন্য যে ধরনের মর্যাদা প্রয়োজন তা বিধবা হওয়ার মধ্য দিয়ে হারাতে হয় এবং রাষ্ট্রীয় কোনো প্রচেষ্টাও তাদের জন্য পরিলক্ষিত হয় না।
পরিবার এবং সমাজে তাদের প্রতি যে বিরূপ দৃষ্টিভঙ্গি সে কারণে তারা নিজেরাও নিজেদের গুরুত্বহীন বলে মনে করেন, ভাগ্যকে দায়ী করেন। এমতাবস্থায় বিধবা নারীদের চাহিদা মোতাবেক তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে তাদের আর্থিক, সামাজিক এবং মানসিক দুরবস্থা থেকে উত্তরণ ঘটানো প্রয়োজন। মনে রাখা দরকার, বিধবা মানেই অভিশাপ নয়। একথা আমাদের সর্বত্র ছড়িয়ে দিতে হবে। অসহায় বিধবাদের পাশে দাঁড়ানো প্রতিটি মানবিক গুণসম্পন্ন ব্যক্তির জন্যই জরুরী। তাই আসুন বিধবাকে অভিশাপ নয় বরং কাছে টেনে মায়ের, স্ত্রী বা বোনের মর্যাদা দিয়ে তাদের পাশে দাঁড়াই। আল্লাহ তাআলা আমাদের বঞ্চিত নিপিড়িতদের পাশে দাঁড়িয়ে আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি হাসিল করার তৌফিক দান করুন।
সংকলনে - সাজ্জাদ সালাদীন
ইসলামে নারী-পুরুষের মধ্যে সম্পর্ক স্থাপনের জন্যে বিয়েই হচ্ছে একমাত্র বৈধ উপায়, একমাত্র বিধিবদ্ধ ব্যবস্থা। বিয়ে ছাড়া অন্য কোনো ভাবে – অন্য পথে – নারী - পুরুষের মিলন ও সম্পর্ক স্থাপন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। বিয়ে হচ্ছে পুরুষ ও নারীর মাঝে সামাজিক পরিবেশে ও সমর্থনে শরীয়ত মুতাবেক অনুষ্ঠিত এমন এক সম্পর্ক স্থাপন যার ফলে দুজনের একত্র বসবাস ও পরস্পরে যৌন সম্পর্ক স্থাপন সম্পূর্ণরূপে বৈধ হয়ে যায়। যার দরুন পরস্পরের ওপর অধিকার আরোপিত হয় এবং পরস্পরের প্রতি দায়িত্ব ও কর্তব্য অবশ্য পালনীয় হয়ে দাঁড়ায়।
শুধু কুমারী বিয়ে করতে হবে; বিধবা বিয়ে করা যাবে না। এটা ঠিক যে, হাদিসে কুমারী বিয়ে করার বিশেষ উৎসাহ এসেছে এবং এর যৌক্তিক কারণও বলা হয়েছে। কেননা অনেক নারী এমন আছেন, যারা বিধবা হওয়ার পর দ্বিতীয়বার স্বামী গ্রহণে
আগ্রহী হন না। কষ্ট হলেও একাকী জীবন যাপন করার পথকেই বেছে নেন। তাদের জন্য সান্ত¦না ও আখেরাতের খুশখবরী জানিয়ে আশ্বস্ত করেছেন রাসূল সাঃ। হাদীসে এসেছে-
ﻋَﻦْ ﻋَﻮْﻑِ ﺑْﻦِ ﻣَﺎﻟِﻚٍ ﺍﻟْﺄَﺷْﺠَﻌِﻲِّ، ﻗَﺎﻝَ : ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ : ﺃَﻧَﺎ ﻭَﺍﻣْﺮَﺃَﺓٌ ﺳَﻔْﻌَﺎﺀُ ﺍﻟْﺨَﺪَّﻳْﻦِ ﻛَﻬَﺎﺗَﻴْﻦِ ﻳَﻮْﻡَ ﺍﻟْﻘِﻴَﺎﻣَﺔِ » ﻭَﺃَﻭْﻣَﺄَ ﻳَﺰِﻳﺪُ ﺑِﺎﻟْﻮُﺳْﻄَﻰ ﻭَﺍﻟﺴَّﺒَّﺎﺑَﺔِ ﺍﻣْﺮَﺃَﺓٌ ﺁﻣَﺖْ ﻣِﻦْ ﺯَﻭْﺟِﻬَﺎ ﺫَﺍﺕُ ﻣَﻨْﺼِﺐٍ، ﻭَﺟَﻤَﺎﻝٍ، ﺣَﺒَﺴَﺖْ ﻧَﻔْﺴَﻬَﺎ ﻋَﻠَﻰ ﻳَﺘَﺎﻣَﺎﻫَﺎ
হযরত আউফ বিন মালিক আশজায়ী রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, আমি এবং কষ্ট ও মেহনতের কারণে বিবর্ণ হয়ে যাওয়া মহিলা কিয়ামতের দিন দুই আঙ্গুলের মত নিকটবর্তী হবো। রাসূল সাঃ তর্জনী ও মধ্যমা পাশাপাশি করে দেখালেন। বংশীয় কৌলিন্য ও সৌন্দর্যের অধিকারিনী যে বিধবা নারী প্রয়োজন থাকা সত্বেও এতিম সন্তানদের লালন পালনের উদ্দেশ্যে দ্বিতীয়বার স্বামী গ্রহণ থেকে নিজেকে বিরত রেখেছে।{সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৫১৪৯}
ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻲ ﻫُﺮَﻳْﺮَﺓَ ﻗَﺎﻝَ : ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ : ” ﺃَﻧَﺎ ﺃَﻭَّﻝُ ﻣَﻦْ ﻳُﻔْﺘَﺢُ ﻟَﻪُ ﺑَﺎﺏُ ﺍﻟْﺠَﻨَّﺔِ، ﺇِﻟَّﺎ ﺃَﻧَّﻪُ ﺗَﺄْﺗِﻲ ﺍﻣْﺮَﺃَﺓٌ ﺗُﺒَﺎﺩِﺭُﻧِﻲ ﻓَﺄَﻗُﻮﻝُ ﻟَﻬَﺎ : ﻣَﺎ ﻟَﻚِ؟ ﻭَﻣَﺎ ﺃَﻧْﺖِ؟ ﻓَﺘَﻘُﻮﻝُ : ﺃَﻧَﺎ ﺍﻣْﺮَﺃَﺓٌ ﻗَﻌَﺪْﺕُ ﻋَﻠَﻰ ﺃَﻳْﺘَﺎﻡٍ ﻟِﻲ
হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ বলেছেন, আমিই ঐ ব্যক্তি যার জন্য সর্ব প্রথম জান্নাতের দরজা খোলা হবে। কিন্তু এক মহিলা এসে আমার আগে জান্নাতে যেতে চাইবে। আমি তাকে জিজ্ঞাসা করবো যে, তোমার কি হল? তুমি কে? তখন সে বলবে, আমি ঐ মহিলা যে স্বীয় এতিমম বাচ্চার লালন পালনের জন্য নিজেকে আটকে রেখেছে [বিবাহ করা থেকে]। {মুসনাদে আবী ইয়ালা, হাদীস নং-৬৬৫১}
যেসব বিধবা বিয়ের যোগ্য বয়সের নয়, আবার তাদের কোন সন্তানও নেই। সেসব বিধবাদের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়াকে অনেক বড় পূণ্যের
কাজ বলে রাসূল সাঃ ঘোষণা দিয়েছেন। যেমন-
ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻲ ﻫُﺮَﻳْﺮَﺓَ، ﻗَﺎﻝَ : ﻗَﺎﻝَ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲُّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ : « ﺍﻟﺴَّﺎﻋِﻲ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻷَﺭْﻣَﻠَﺔِ ﻭَﺍﻟﻤِﺴْﻜِﻴﻦِ، ﻛَﺎﻟْﻤُﺠَﺎﻫِﺪِ ﻓِﻲ
ﺳَﺒِﻴﻞِ ﺍﻟﻠَّﻪِ، ﺃَﻭِ ﺍﻟﻘَﺎﺋِﻢِ ﺍﻟﻠَّﻴْﻞَ ﺍﻟﺼَّﺎﺋِﻢِ ﺍﻟﻨَّﻬَﺎﺭَ »
হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, বিধবা এবং মিসকিনের সহযোগিতাকারী আল্লাহর রাস্তায় জিহাদকারীর ন্যায়, বা সর্বদা রাতে নামাযরত ও দিনের বেলা রোযাদার ব্যক্তির মত। {সহীহ বুখারী, হাদীস নং-৫০৩৮,৫৩৫৩}
এরকম আরো অসংখ্য হাদীস প্রমাণ করে প্রতিটি সামর্থবান ব্যক্তি বিধবা নারীদের যথাযথ সম্মান ও প্রয়োজনে সহযোগিতা করা উচিত। এটাই ইসলামের দাবি এবং মানবতার দাবি।
আসলে স্বামীর মৃত্যুর পর বিধবা নারীর শোকে কাতর হওয়া ছাড়া আর কোনো পথ খোলা থাকে না। নিরাপদ আশ্রয় ও মানবিক মর্যাদা হারানোর কারণে সমাজ-সম্প্রদায়ে পরিপূর্ণ অংশগ্রহণও তার পক্ষে আর সম্ভব হয় না। একজন বিধবা নারী তার উত্তরাধিকার সম্পত্তি, সন্তান, স্বামী, সংসার, দেনমোহর, নিরাপদে কাজ করা, সমাজের কাছে সাহায্য পাওয়া, সামাজিক মর্যাদা পাওয়ার অধিকার রাখেন। কিন্তু তারা এই অধিকারগুলো পাচ্ছেন না। একজন মানুষ হিসেবে বেঁচে থাকার জন্য যে ধরনের মর্যাদা প্রয়োজন তা বিধবা হওয়ার মধ্য দিয়ে হারাতে হয় এবং রাষ্ট্রীয় কোনো প্রচেষ্টাও তাদের জন্য পরিলক্ষিত হয় না।
পরিবার এবং সমাজে তাদের প্রতি যে বিরূপ দৃষ্টিভঙ্গি সে কারণে তারা নিজেরাও নিজেদের গুরুত্বহীন বলে মনে করেন, ভাগ্যকে দায়ী করেন। এমতাবস্থায় বিধবা নারীদের চাহিদা মোতাবেক তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে তাদের আর্থিক, সামাজিক এবং মানসিক দুরবস্থা থেকে উত্তরণ ঘটানো প্রয়োজন। মনে রাখা দরকার, বিধবা মানেই অভিশাপ নয়। একথা আমাদের সর্বত্র ছড়িয়ে দিতে হবে। অসহায় বিধবাদের পাশে দাঁড়ানো প্রতিটি মানবিক গুণসম্পন্ন ব্যক্তির জন্যই জরুরী। তাই আসুন বিধবাকে অভিশাপ নয় বরং কাছে টেনে মায়ের, স্ত্রী বা বোনের মর্যাদা দিয়ে তাদের পাশে দাঁড়াই। আল্লাহ তাআলা আমাদের বঞ্চিত নিপিড়িতদের পাশে দাঁড়িয়ে আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি হাসিল করার তৌফিক দান করুন।
0 Comments