Header Ads Widget

Responsive Advertisement

হিলফুল ফুযুল কি মুসলিমদের বা আহলে হাদীসদের কোন সংগঠন ছিল

হিলফুল ফুযুল কি মুসলিমদের বা আহলে হাদীসদের কোন সংগঠন ছিল? >>>

আরবি حِلْفُ الفُضُول এর উচ্চারণ হিলফুল ফুদু-ল কিন্তু বাংলায় আমরা উচ্চারণ করি হিলফুল ফুজুল। হিলফ শব্দের কয়েকটি অর্থ আছে; সংঘ, বন্ধুত্ব, মৈত্রী, শপথ, কসম, প্রতিজ্ঞা, হলফ, চুক্তি। আর (ফুদু-ল) فُضُول শব্দটি فَضْل (ফাদল) শব্দের বহুবচন। ফাদল অর্থ কল্যান, শান্তি, অবদান, এছাড়াও আরও কয়েকটি অর্থ আছে। হিলফুল ফুজুল এর শাব্দিক অর্থ বিভিন্ন রকম করা যেতে পারে তবে অধিকাংশরাই এর অর্থ করে থাকে শান্তির সংঘ বা কল্যাণের সংগঠন বা কল্যাণের শপথ

এই সংঘ আরব যুবক হযরত মুহাম্মাদ (ﷺ) প্রতিষ্ঠা করেন। এই সংঘ পবিত্র মক্কা শহরে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। মুহাম্মাদ (ﷺ) ইসলাম পুর্বযুগে এই সংঘ প্রতিষ্ঠা করেন। এই সংগঠনের উদ্দেশ্য ছিল; পীড়িতদের সাহায্য দান, দুঃস্থদের আশ্রয় দান ও অসহায়দের সহায়তা করা। এই সংগঠনের ফলে মক্কায় অনেক বিপর্যয় থেকে রেহাই পায়। কাবা ঘরের কালো পাথর পুনঃপ্রতিষ্ঠার সময়ও এই সংঘ ভুমিকা রাখে। উপরের উল্লেখিত উদ্দেশ্যে এবং ঐ সংগঠনের আদলে সংগঠন হলে কোন দোষ নাই। কিন্তু 
.
আহলে হাদীসদের একটি দল সংগঠন করতে হিলফুল ফুযুল-এর দলীল দেয়। এখন প্রশ্ন?

এই সংগঠনের আমির কে ছিল? এই সংগঠনের বায়আত কি নিয়েছিল? এই সংগঠনে কারা মুসলিম ছিল বা  কারা আহলে  হাদীস ছিল? তদুপরি এই সংগঠনটি ছিল মুহাম্মাদ (ﷺ) এর রিসালাত বা নাবুয়াত পাওয়ার আগের ঘটনা। এটি ইসলাম আসার পূর্বের ঘটনা। এটি ইসলামের দলীল হতে পারে না।
.
রাসূল (ﷺ) রিসালাত বা নাবুয়াত পাওয়ার আগে হেরা গুহায় ধ্যান করেছিলেন। এখন আমাদের জন্য হেরা গুহায় বা অন্য কোন গুহায় মুরাকাবা বা ধ্যান করা কি জায়েয হবে?

ওটাও তো ওনার সীরাত বা জীবনীতে আছে। যদি ধ্যান করা জায়েয না হয় তাহলে রাসূল (ﷺ) এর রিসালাত বা নাবুয়াতের আগের জীবন হিলফুল ফুযুল দিয়ে সংগঠন বা দল তৈরী করার দলীল হয় কিভাবে? আর যদি হিলফুল ফুযুল দিয়ে সংগঠন বা দল তৈরী করা জায়েয হয় তাহলে সুফিদের মুরাকাবা বা ধ্যান করাও জায়েয হবে। নিজের পছন্দের হলে দলীল গ্রহন করবেন আর পছন্দ না হলে গ্রহন করবেন না এটাই তো হলো প্রবৃত্তি। যদি হিলফুল ফুযুল আপনাদের দলীল হয় তাহলে যান বনে-জংগলে বা গুহায় যেয়ে ধ্যান, মুরাকাবা করেন। এতে অনেক ফয়দা হবে।
.

ধ্যান করা বা হিলফুল ফুযুল মুহাম্মাদ (ﷺ) এর জীবনের ঘটনা। ওটা রাসুলের জীবনের ঘটনা নয়।

আল্লাহর বাণী;

كَانَ لَكُمْ فِي رَسُولِ اللَّهِ أُسْوَةٌ حَسَنَةٌ لِمَنْ كَانَ يَرْجُو اللَّهَ وَالْيَوْمَ الآخِرَ وَذَكَرَ اللَّهَ كَثِيرًا
অবশ্যই তোমাদের জন্য আল্লাহর রাসূলের মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ, তাদের জন্য যারা আল্লাহ ও আখিরাত প্রত্যাশা করে আর আল্লাহকে অধিক স্মরণ করে। আল-আহযাব, ৩৩/২১

উপরের আয়াতে মহান আল্লাহ মুহাম্মদের আদর্শ বলেন নাই বরং বলেছেন আল্লাহর রাসূলের মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ। তাই আমাদের আদর্শ হবে মুহাম্মদ (ﷺ) রিসালতের পরের জীবন। হিলফুল ফুযুল এর দলিল দিয়ে যদি প্রত্যেকেই সংগঠন বানানো শুরু করেন আর প্রত্যেক দলে একজন করে আমির থাকে তাহলে মুসলিমদের মধ্যে হবে বহু দল আর ফের্কা
তৈরী হবে। আর এটাই হবে দলাদলী। মহান আল্লাহ বলেন,
إِنَّ ٱلَّذِينَ فَرَّقُواْ دِينَهُمۡ وَكَانُواْ شِيَعٗا لَّسۡتَ مِنۡهُمۡ فِي شَيۡءٍۚ إِنَّمَآ أَمۡرُهُمۡ إِلَى ٱللَّهِ ثُمَّ يُنَبِّئُهُم بِمَا كَانُواْ يَفۡعَلُونَ
‘নিশ্চয় যারা স্বীয় ধর্মকে খণ্ড-বিখণ্ড করেছে এবং অনেক দলে বিভক্ত হয়ে গেছে, তাদের সাথে আপনার কোন সম্পর্ক নেই। তাদের বিষয় আল্লাহ তা‘আলার নিকট সমর্পিত। অতঃপর তিনি তাদেরকে তাদের আমলের হিসাব দিয়ে দিবেন’ (আল-আন‘আম ১৫৯)।

আমাদের সকল মুসলিমকে একটি মাত্র দলে থাকতে হবে, যে দলে রাসুল (ﷺ) তার সাহাবাদেরকে রেখে গিয়েছিলেন সে দলে। অন্য কোন নতুন দল বানানো বা অন্য দলে যাওয়া মানে রাসুলের দল থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া। হকপন্থী হতে হলে রাসুলের জামআতে শামিল হতে হবে। এর কোন বিকল্প নেই।
.
শায়খ সালেহ ইবনে মুহাম্মাদ আল-লুহা’য়দান হা’ফিজাহুল্লাহ বলেন “সকল মুসলিমকে ঐক্যবদ্ধভাবে হাতে হাত মিলিয়ে এক দল হয়ে থাকতে হবে। কোনো মুসলিমের জন্য কোনো দল, জামাআ’ত বা সংগঠনে যোগ দেওয়া শোভনীয় নয়। এটিই হচ্ছে আল্লাহ নির্দেশিত এবং রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রদর্শিত সরল সঠিক পথ। এ সোজা পথ ছেড়ে এখানে-সেখানে যোগ দেওয়ার অর্থই হলো নিজেকে এমন পথে পরিচালিত করা, যার শেষ গন্তব্য ধ্বংস বৈ কিছুই নয়! সেজন্য যুব সমাজের প্রতি আমার নসীহত হচ্ছেঃ তারা শরঈ’ জ্ঞান অর্জন করবে এবং কোনো কিছু বুঝতে সমস্যা হলে যোগ্য ও অভিজ্ঞ উলামায়ে কেরামকে জিজ্ঞেস করবে।”


Post a Comment

0 Comments