Header Ads Widget

Responsive Advertisement

মৃত্যুর পর কোন জিনিস আমার, আপনার সঙ্গী হবে

>>> মৃত্যুর পর কোন জিনিস আমার, আপনার সঙ্গী হবে? <<<

আনাস ইবনু মালিক রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত; রাসুলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন;

يَتْبَعُ الْمَيِّتَ ثَلاَثٌ فَيَرْجِعُ اثْنَانِ وَيَبْقَى وَاحِدٌ يَتْبَعُهُ أَهْلُهُ وَمَالُهُ وَعَمَلُهُ فَيَرْجِعُ أَهْلُهُ وَمَالُهُ وَيَبْقَى عَمَلُهُ

তিনটি জিনিস মৃত ব্যক্তির পিছন পিছন অনুসরণ করে, তারপর দুটি ফিরে আসে এবং একটি তার সাথে থেকে যায়। তার পরিবার-পরিজন, মাল ও আমল তার সাথে যায়। অতঃপর তার পরিজন ও মাল ফিরে আসে এবং তার আমল তার সাথে থেকে যায়। (সহীহ মুসলিম: ৭৩১৪; তিরমিযি: ২৩৭৯; নাসাঈ: ১৯৪১)
.
কি কি উপায় আমরা আমল করতে পারি?

আমলে করার কয়েকটি মাধ্যম আছে, যেমন: ১। অন্তর দিয়ে ২। জবান দিয়ে ৩। শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ দিয়ে ৪। অর্থ দিয়ে।
.
✔ ১। অন্তর দিয়ে আমল করা। যেমন: সালাত শুরু করা আগে অন্তর দিয়ে নিয়্যাত করতে হয়। রমযান মাসে সিয়াম শুরু করা আগেও অন্তর দিয়ে নিয়্যাত করতে হয়। এমন কি প্রতিটি ইবাদতের ক্ষেত্রে অন্তর দিয়ে নিয়্যাত করতে হয়। অন্তর দিয়ে নিয়ত করা সুন্নাত অপরদিকে মুখে নিয়্যাত উচ্চারণ করা বিদআত। কারণ নিয়্যাত অন্তরের সাথে সম্পর্কিত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন;
ﺇِﻧَّﻤَﺎ ﺍﻷَﻋْﻤَﺎﻝُ ﺑِﺎﻟﻨِّﻴَّﺎﺕِ، ﻭَﺇِﻧَّﻤَﺎ ﻟِﻜُﻞِّ ﺍﻣْﺮِﺉٍ ﻣَﺎ ﻧَﻮَﻯ
প্রত্যেক আমল নিয়্যাতের সাথে সম্পর্কিত আর প্রত্যেক ব্যক্তি তার নিয়্যাত অনুযায়ী ফলাফল পাবে। (বুখারী: ১)
.
✔ ২। জবান দিয়ে আমল করা। যেমন: সালাতের মধ্যে রুকু, সেজদায় বিভিন্ন তাসবীহ পাঠ করা, কিরাত পড়া। ফরয সালাতের শেষে মনে মনে একা একা বিভিন্ন সুন্নাতী দু‘আ পড়া। এছাড়া সর্বদা বিভিন্ন তাসবীহ পাঠ করা। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ
كَلِمَتَانِ خَفِيفَتَانِ عَلَى اللِّسَانِ، ثَقِيلَتَانِ فِي الْمِيزَانِ، حَبِيبَتَانِ إِلَى الرَّحْمَنِ
দু’টি বাক্য যা জিহবাতে (উচ্চারণ) অতি সহজ, মীযানে অনেক ভারী আর রহমানের নিকট অতি প্রিয়; তা হচ্ছে-
سُبْحَانَ اللَّهِ وَبِحَمْدِهِ سُبْحَانَ الِلَّه الْعَظِيمِ
“সুবহা-নাল্লা-হি ওয়াবিহামদি, সুবহা-নাল্লা-হিল্ আযী-ম” অর্থ: পবিত্রতা ও মহিমা আল্লাহর আর প্রশংসাও তাঁর; পবিত্রতা ও মহিমা মহান আল্লাহর। (সহীহুল বুখারী: ৬৪০৬, ৬৬৮২, ৭৫৬৩; সহীহ মুসলিম, মুসনাদে আহমদ)
.
জবান দিয়ে আমলে জন্য এ রকম আরও বহু তাসবীহ রয়েছে। আবার মুখ দিয়ে বিভিন্ন বিদআতি বাক্যও পাঠ করা হয়। যেমন: মিলাদে যে সব বাক্য পাঠ করা হয় তার অধিকাংশ বিদআত। আর মিলাদ হলো একটি বিদআতি আমল। কারণ রাসুল (ﷺ) ও তার সাহাবীগণ তা করেন নাই।
.
✔ ৩। শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ দিয়ে আমল করা। যেমন: সালাত আদায় করা। সিয়াম পালন করা ইত্যাদি। সালাতে রুকু করতে, সিজদা করতে, কিয়াম করতে শরীরের অঙ্গ প্রত্যঙ্গ ব্যবহার করতে হয়। আর সিজদা করতে হয় শরীরের সাতটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ দিয়ে। আবার সিয়াম রাখতেও শরীরের অঙ্গ প্রত্যঙ্গ কাজে লাগাতে হয়। তাই সালাত ও সিয়াম হলো অঙ্গ প্রত্যঙ্গ-এর আমল।
.
✔ ৪। অর্থ দিয়ে আমল করা। যেমন: দান-সাদকাহ করা, যাকাত দেয়া। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেন;
اتَّقُوا النَّارَ وَلَوْ بِشِقِّ تَمْرَةٍ فَإِنْ لَمْ تَجِدُوا فَبِكَلِمَةٍ طَيِّبَةٍ
তোমরা জাহান্নামের অগ্নি থেকে নিজেকে বাচাঁও, এক টুকরা খেজুরের বিনিময়ে হলেও। যদি তাও না পাও তবে উত্তম কথার বিনিময়ে হলেও। (সহীহুল বুখারী: হা/৬৫৬৩, ৬৫৪০, ১৪১৭, ৬০২৩, সহিহ মুসলিম: হা/২২৪০, ২২৩৯)
.
✔ ৫। আবার এমন একটি আমল রয়েছে যার জন্য অন্তর, মুখ, শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ, এবং অর্থ সবগুলি প্রয়োজন। সেটা হলো হ্জ্জ। সামর্থবান প্রতিটি মুসলিমের জন্য জীবনে একবার হজ্জ করা ফরয। হজ্জের জন্য প্রথমে অন্তরে নিয়্যাত থাকতে হয়। হজ্জে যাওয়ার পর মুখে তালবীয়া পাঠ করতে হয়। শরীরের কষ্ট তো আছেই আর অর্থ ছাড়া হজ্জ করা সম্ভব না। রাসূল (ﷺ) এরশাদ করেন,
تَابِعُوا بَيْنَ الْحَجِّ وَالْعُمْرَةِ فَإِنَّهُمَا يَنْفِيَانِ الْفَقْرَ وَالذُّنُوبَ كَمَا يَنْفِى الْكِيرُ خَبَثَ الْحَدِيدِ وَالذَّهَبِ وَالْفِضَّةِ وَلَيْسَ لِلْحَجَّةِ الْمَبْرُورَةِ ثَوَابٌ إِلاَّ الْجَنَّةُ
‘তোমরা হজ্জ ও ওমরা পালনের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখ। কেননা এতদুভয় দরিদ্রতা এবং গোনাহ দূর করে দেয়, যেমনিভাবে হাপর লোহা ও সোনা-রূপার ময়লা দূর করে। আর ক্ববূল হজ্জের প্রতিদান জান্নাত ছাড়া কিছুই নয়’ (তিরমিযী, হা/৮১০; ইবনে খুযায়মা, হা/২৫১২; নাসা‘ঈ, হা/২৬৩১)


Post a Comment

0 Comments